সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর একটি সুবিধাবাদী চক্র ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টায় মাঠে নেমেছে। সম্প্রতি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়া গ্রামে স্থানীয় বিএনপির অতিউৎসাহীরা খন্দকার মোশতাক আহমেদের বাড়ির সংস্কার কাজ বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এক সপ্তাহেও ঘরের চাবি ফিরিয়ে না দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তার ছেলে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের অবগত করে সহযোগিতা চেয়েছেন।
বাড়ির কেয়ারটেকার নিজাম উদ্দিন জানান, গত ১৩ আগস্ট বাড়ির সংস্কার ও মেরামতকাজ চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামানসহ কয়েকজন এসে জানতে চান পীর সাহেবের বাড়ি কোনদিকে। আমি দেখিয়ে দিলে উনারা সেখানে যান। এরপর বিকেল ৫টার দিকে দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল লতিফ, স্থানীয় বিএনপি নেতা জসীম উদ্দিন ও দশপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক এসে একই কথা জিজ্ঞেস করেন। এরপর উনারা বাড়ির উত্তর দিকে কিছুটা দূরে খন্দকার নাসিরুল কবীরের বাড়িতে যান। বেশ কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে ফিরে আসেন। পরে শ্রমিকদলের আব্দুর রাজ্জাক মেরামত কাজ বন্ধ করে খন্দকার মোশতাকের বাড়ির গেটে তালা লাগিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ মোবাইল ফোনে জানান, আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে থাকা আমার আত্মীয় খন্দকার নাসিরুল কবীর ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য তার ভাগ্নি জামাতা বিজুকে দিয়ে স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাদের ব্যবহার করে একজন তাদের বাড়িতে বেআইনিভাবে তালা লাগিয়েছেন। ঘটনাটি নিন্দনীয় ও অন্যায়। আমি বিষয়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য দাউদকান্দির অভিভাবক শ্রদ্ধেয় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তার পুত্র বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার মারুফ হোসেনসহ সিনিয়র নেতাদের জানিয়ে এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু যারা বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে চাবি নিয়ে গেছেন, তা এক সপ্তাহেও ফেরত দিচ্ছেন না।
দশপাড়া গ্রামে পীর সাহেবের বাড়ির সীমানা দেয়াল ভেঙেছে মর্মে দলের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনায় ঘটনাস্থলে গিয়ে যারা দেয়াল ভেঙেছেন তাদের শনাক্ত করে তা নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলে অভিযুক্তরা এটি রাতের মধ্যেই করে দেন। কিন্তু আমরা যখন শেষ বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসছিলাম তখন আমাদের মধ্যে কেউ খন্দকার মোশতাকের বাড়ির গেটে তালা লাগিয়ে চাবি তাদের প্রতিপক্ষের লোকের হাতে দিয়ে এসেছেন। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না।
এদিকে দশপাড়া গ্রামের লোকজন জানান, গত ১৬ বছর ধরে খন্দকার মোশতাক আহমেদের পরিবারের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা আত্মীয়রা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় হামলা-মামলা থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে আওয়ামী লীগে ভূমিকা রেখেছে। অথচ গত ৫ আগস্ট পরবর্তী কয়েকদিন না যেতেই খন্দকার মোশতাক পরিবারের প্রতিপক্ষ খন্দকার নাসিরুল কবীর ও তার সহযোগীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপি নেতা কিংবা দলটির নাম ব্যবহার শুরু করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।