Monday, August 18, 2025

‘উত্তরায় মসজিদে ইমামকে ঘুষি মেরে হত্যা’র দাবি নিয়ে যা জানা গেল

আরও পড়ুন

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে―রাজধানীর উত্তরার ১৩ নং সেক্টরের গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে অন্য এক মুসল্লি ঘুষি মেরে হত্যা করেছেন। যা মিথ্যা ও কেবলই গুজব।

তথ্য যাচাই-বাছাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান বলছে, উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে অন্য মুসল্লির ঘুষিতে ইমামের মৃত্যুর বিষয়টি সঠিক নয়। হামলার শিকার ব্যক্তি মারাও যাননি এবং তিনি মসজিদের কোনো ইমামও নন।

এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক টুইটার)-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এ দাবির ব্যাপারে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sami Joy নামের একজন সংবাদকর্মীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে খুঁজে পাওয়া যায় ভিডিওটি। গত ৭ মার্চ প্রচার করা হয় ভিডিওটি। এর শিরোনামে ‘গাউছুল আজম মসজিদে মারামারি’ দাবি করা হলেও এ ঘটনায় কারও মৃত্যুর কথা উল্লেখ দেখা যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

পোস্টের অনুযায়ী পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একটি দৈনিক পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ১৫ মার্চ উত্তরার ১৩ নং সেক্টর মসজিদের ভাইরাল ভিডিওটি কাটছাঁট করা ও গুজব, মুসল্লী সুস্থ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশ হওয়া একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুফতি জুনায়েদ কাসেমীর বরাতে জানানো হয়েছে―অন্য এক মুসল্লির ঘুষিতে লুটিয়ে পড়া ব্যক্তি একদম সুস্থ-স্বাভাবিক আছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি কাটছাট করে তৈরি করা। মূল ভিডিওতে লুটিয়ে পড়া ব্যক্তিকে এক মিনিট পরই উঠতে দেখা গেছে। আরও জানা যায়, হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তির নাম আনোয়ারুল কিবরিয়া। এই ব্যক্তির স্ত্রীও তার সুস্থতার কথা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  কক্সবাজারে বিপুল অস্ত্রসহ আ.লীগ নেতা আটক

এ ব্যাপারে গাউছুল আজম জামে মসজিদের অফিস সহকারী নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ মার্চ ভোরে। তিনি এ ঘটনার কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করেন। যেখানে হামলার শিকার ব্যক্তিকে কিছুক্ষণ পর সুস্থ অবস্থায় মসজিদ থেকে হেঁটে বের হতে দেখা গেছে।

এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আড়ালের চোখ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১১ মার্চ এ ঘটনা নিয়ে মসজিদ কমিটির দেয়া বিবৃতির একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া। ভিডিও থেকে জানা যায়, মসজিদটিতে সাদপন্থীদের বসা নিয়ে আরেক পক্ষের সঙ্গে কয়েকদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল। হামলার শিকার আনোয়ারুল কিবরিয়া সাদপন্থী হওয়ায় তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় হামলাকারীর। আর একপর্যায়ে আনোয়ারুলকে তিনি আঘাত করেন। পরবর্তীতে সবার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়।

আরও পড়ুনঃ  নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা জনগণই রুখে দেবে : উপদেষ্টা আসিফ

অর্থাৎ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে হামলার শিকার ব্যক্তিটি মসজিদের কোনো ইমাম নন এবং তার মৃত্যুর বিষয়টিও সঠিক নয়। এ থেকে এটা স্পষ্ট যে, উত্তরার গাউসুল আজম জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর ইমামকে ঘুষি মেরে হত্যা করার দাবিটি কেবলই মিথ্যা ও গুজব।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ