পবিত্র রমজান মাসে সেহরির আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গতকাল মধ্যরাতে নির্বিচার বোমা হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। এতে চারশরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বর্বরোচিত এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও ছয় শতাধিক মানুষ।
ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাধর দেশ সৌদি আরব। ২৭ শব্দের ইংরেজি এ বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখেছে, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন পুনরায় শুরু করার… এবং নিরস্ত্র বেসামরিক জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তাদের সরাসরি বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সৌদি আরব।”
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সর্বশেষ আপডেটে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের হামলায় ৪১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে আরও অনেক মানুষ আটকে আছেন। যাদের নাম আহত বা নিহতের তালিকায় যুক্ত করা হয়নি।
সোমবার রাত ২টার দিকে আকস্মিকভাবে গাজায় বোমা হামলা চালানো শুরু করে দখলদাররা। কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী এ হামলায় মুহূর্তের মধ্যে ঝরে যায় শত শত মানুষের প্রাণ।
আহতের সংখ্যা এতটাই বেশি যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেখানকার সব হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছে। রক্তের স্বল্পতার পাশাপাশি পেইনকিলার ও ব্যান্ডেজের সংকটেও পড়েছেন চিকিৎসকরা।
গত ১৭ দিন ধরে গাজায় সবধরনের ত্রাণ ও সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি দখলদাররা। আর সেখানকার মানুষকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে বর্বর ও কাপুরোষিত এ হামলা চালিয়েছে তারা।
দখলদার ইসরায়েল বলেছে, হামাস তাদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং তারা তাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এ কারণে সোমবার রাতে হামলা চালানো হয়েছে। যদিও হামাস জানিয়েছিল, পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী যদি ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করে তাহলে তারা সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিয়ে দেবে। কিন্তু দখলদার এতে সম্মত হয়নি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজায় যে নতুন করে আবারও নির্বিচার হামলা চালানো হবে সেটি কয়েক সপ্তাহ আগেই ঠিক করা হয়। অর্থাৎ হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় হামলা চালানো হয়েছে— এটি সত্য নয়।