Tuesday, March 18, 2025

জ্বলন্ত উড়োজাহাজ থেকে পালানোর ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা

আরও পড়ুন

১৭২ জন যাত্রী নিয়ে উড্ডয়ন করা উড়োজাহাজটির ডালাস যাওয়ার কথা ছিল। তব্র পথিমধ্যে এটির ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দিলে জরুরি অবতরণ করা হয়। এরপর উড়োজাহাজটিতে আগুন লেগে যায়। তখন আতঙ্কিত যাত্রীদের অনেকে এর ডানার ওপর গিয়ে দাঁড়ান। কলোরাডোর রাজধানী ডেনভারের বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা উড়োজাহাজটি থেকে তখন এ যাত্রীদের ঘিরে ঘন ধোঁয়া বের হচ্ছিল।

আগুন ধরে যাওয়ার পর আমেরিকান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ থেকে পালিয়ে বেঁচে ফেরা যাত্রীদের একজন তার অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘এটি ছিল সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ার মতো, আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ও ভয়ানক ঘটনা।’

বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় উড়োজাহাজটি থেকে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন আরোহীদের সবাই। তাদের মধ্যে ছিলেন ছয়জন ক্রু সদস্যও ছিলেন। তবে সামান্য আহত হওয়ায় ১২ যাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পাকিস্তানে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

ফিরে আসা যাত্রীদের একজন মাইকেল উডস। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে উডস বলেন, আকাশে ওড়ার আগপর্যন্ত উড়োজাহাজের ইঞ্জিনগুলোর একটি থেকে বিকট শব্দ বেরিয়ে আসার বিষয়টি তিনি টের পাননি। ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নিশ্চিত করেছে, ক্রু সদস্যরা ইঞ্জিন থেকে প্রতিধ্বনির শব্দ বেরিয়ে আসার তথ্য জানানোর পর স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে উড়োজাহাজটি ডেনভারের দিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়।

উড়োজাহাজটিকে জরুরি অবতরণ করানোর পর যাত্রীরা শিগগিরই বুঝতে পারেন, তারা তখনো মোটেও নিরাপদ নন। উডস নামের ওই নারী যাত্রী বলেন, ‘সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেবিন ধোঁয়ায় ভরে যায়।’ কলোরাডোয় একটা বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়ে উড়োজাহাজটিতে করে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে শুরু হলো বেঙ্গল পর্যটন মেলা, বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে যা জানা গেল

উডস উড়োজাহাজের সম্মুখভাগের আসনের যাত্রী ছিলেন। জরুরি অবতরণ করার পর কেবিন থেকে হাতে গোনা যে কয়েকজন হেঁটে নিচে নামতে সক্ষম হয়েছিলেন, তিনি তাদের একজন। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন উড়োজাহাজ থেকে অন্য যাত্রীদের সহজে পালিয়ে আসাটা সহজ ছিল না। তারা অনেকে এটির ডানায় আশ্রয় নেন। তাদের ডানায় আশ্রয় নেয়ার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কেবিন ধোঁয়ায় ঢেকে গেলে প্রাণ বাঁচাতে অন্যদের মতো উড়োজাহাজের ডানায় আশ্রয় নেন ইংরিড হিবিটও। সিবিএসকে এই নারী বলেন, ‘(আপনি দেখে থাকবেন) জানালা দিয়ে আগুনের শিখা বের হচ্ছে ও সেগুলো একরকম গলে পড়ছে।’ উড়োজাহাজটি থেকে বেরিয়ে আসা একটা কঠিন কাজ ছিল বলে জানান তিনি। হিবিটের কথায়, ‘(আতঙ্কে) আমি যেন কাঁপছিলাম, স্থির থাকতে পারছিলাম না।’

আরও পড়ুনঃ  গাজায় এক কবর থেকেই উঠে আসছে শত শত লাশ

হিবিট বলেন, ‘আশা করছিলাম, সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা নিশ্চিতভাবে জানতাম না, সামনে কী ঘটতে যাচ্ছে। মাত্র ১০ মিনিটের অগ্নিপরীক্ষা, তবু তা ছিল অনেক দীর্ঘ ১০টি মিনিট।’ দুর্ঘটনা থেকে সব যাত্রী অক্ষত থাকায় এক অসাধারণ অনুভূতির কথা জানান তিনি।

অবশেষে হিবিট ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা শুক্রবার সকালে নিজেদের গন্তব্যস্থল ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাতে সক্ষম হন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন দুর্ঘটনায় পড়া উড়োজাহাজের আরও কিছু যাত্রী। শ্বাসরুদ্ধকর এ ঘটনার সাক্ষী হয়ে নিরাপদে গন্তব্যে ফিরতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন হিবিট। তবে ঘটনাটি তাদের পারিবারিক ছুটি কাটানোর শুরুটা ম্লান করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ