পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গতকাল রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংস্থাটি।
এখন বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় এলে শুনানি হবে।
এ ব্যাপারে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির ব্যাপারে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশ ছাড়ার আগে বেনজীর আহমেদ যে টাকা তুলে নিয়েছেন তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।
এখন কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তা এসব খতিয়ে দেখছেন। বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় এলে শিগগির শুনানি হবে।
বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে গত ৩১ মার্চ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। গত ২১ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। রিটের ওপর ২৩ এপ্রিল শুনানি হয়।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিন বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের অনুসন্ধান বিষয়ে অগ্রগতির প্রতিবেদন দুই মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী গতকাল প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।
এদিকে, বেনজীরের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ২২ এপ্রিল কমিটি গঠন করে দুদক। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ২৩ এপ্রিল থেকে টাকা সরাতে থাকেন সাবেক এই আইজিপি। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১৩ কোটি টাকা তোলেন বেনজীর, তার স্ত্রী জিসান মির্জা ও মেয়ে ফারহিন রিসতা।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, অনুসন্ধান শুরুর পর বেনজীরের টাকা সরিয়ে নেওয়া এবং টাকা তোলার তৎপরতা তার অপরাধপ্রবণ মানসিকতার বিষয়টি প্রমাণ করে।
এরই মধ্যে তিন দফায় সাবেক আইজিপির প্রায় ৭০০ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে। একই সঙ্গে জব্দ রয়েছে ১২টি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাংক হিসাবসহ বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে আরও সম্পত্তি থাকতে পারে বলে ধারণা দুদকের। সংস্থাটির আইনজীবী বলছেন, এ বিষয়ে শিগগির মামলার সিদ্ধান্ত আসবে।