Monday, August 18, 2025

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান উইনস্টন চার্চিলের নাতির

আরও পড়ুন

ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আইকনিক নেতা উইনস্টন চার্চিলের নাতি লর্ড নিকোলাস সোয়েমস। মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে ব্রিটিশ রাজনৈতিক আলোচনায় এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জন মেজরের সরকারে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক এই কনজারভেটিভ এমপি গত শুক্রবার হাউস অফ লর্ডসে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্রিটিশ স্বীকৃতি সমর্থনকারী একটি বিলের পক্ষে বক্তব্য দেন।

নিকোলাস সোমস ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলের অবৈধভাবে দখলকৃত ভূখণ্ডে ১৯৬৭ সালের লাইন অনুযায়ী ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেই কেবল এটা প্রমাণ হবে যে, সরকার আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সমানভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও পড়ুনঃ  ইরানের কাছে এমন কী আছে, যাতে ভয় পায় ইসরায়েল?

বিশ্লেষকদের মতে, সোয়েমসের কথার তাৎপর্য অনেক। তিনি ব্রিটিশ রাজনৈতিক ভূদৃশ্যের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব – কেবল রাজনীতিতে তার দীর্ঘ রেকর্ডের কারণে নয়, বরং তার পারিবারিক ইতিহাসের কারণেও।

সোয়েমসের দাদা উইনস্টন চার্চিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে দেশকে বিজয়ী করেছিলেন। তিনি সম্ভবত ব্রিটিশ রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।

‘দ্য ব্রিটেন প্যালেস্টাইন’ প্রজেক্টের সংসদীয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সোয়েমস ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্রিটিশ স্বীকৃতিকে ‘নৈতিকভাবে সঠিক এবং দৃঢ়ভাবে আমাদের জাতীয় স্বার্থে’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনকে অবশ্যই তার কূটনৈতিক প্রভাব এবং সমন্বিত শক্তি ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা, ২ ভারতীয় সেনা নিহত

সোয়েমস বলেন, ফিলিস্তিনের জাতিসংঘ সদস্যপদ দাবিকে সমর্থন করতে যুক্তরাজ্যের ব্যর্থতা নীতিগতভাবে ভুল। এটি এই অঞ্চলে ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং প্রভাবকে ক্ষুণ্ণ করেছে।

সোয়েমস যুক্তরাজ্যকে ‘ইসরায়েলের জন্মের সময় ধাত্রী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর জারি করা বেলফোর ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনে ইহুদি জনগণের জন্য একটি জাতীয় আবাস প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে শর্ত ছিল, ফিলিস্তিনে বিদ্যমান অ-ইহুদি সম্প্রদায়ের নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ করার মতো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

ঔপনিবেশিক সচিব হিসেবে ১৯২১ সালে উইনস্টন চার্চিল বেলফোর ঘোষণা বাস্তবায়ন করেন বলে মনে করা হয়। পরবর্তীতে যুদ্ধের সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ইসরায়েল সৃষ্টির পক্ষে জোর দেন। ১৯৫১ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসার পর তিনি দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলপন্থী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেন।

আরও পড়ুনঃ  ৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, নিরাপদে আছে ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা

তার নাতি সোয়েমস গত সপ্তাহে বলেন, ঘোষণাপত্রে বর্ণিত ফিলিস্তিনের অ-ইহুদি সম্প্রদায়ের অধিকার স্পষ্টতই সমুন্নত রাখা হয়নি, যা একটি ঐতিহাসিক অবিচার তৈরি করেছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই সমান মান বজায় রাখতে হবে, দ্বিমুখী মান নয় – আমরা ফিলিস্তিনিদের একই অধিকার অস্বীকার করে ইউক্রেনের জনগণের জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার পক্ষে দাঁড়াতে পারি না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ