Monday, August 18, 2025

সই জাল করে বোনের কাছে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেন টিউলিপ

আরও পড়ুন

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক জাল স্বাক্ষরযুক্ত একটি নথি ব্যবহার করে তার বোনের কাছে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তকারীরাও অভিযোগ করেছেন ঢাকার গুলশান এলাকায় ফ্ল্যাটটি অবৈধভাবে অধিগ্রহণ করেছিলেন টিউলিপ।

তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার পূর্বাচলে সরকারি প্লট বরাদ্দের অভিযোগও এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক অভিযোগ করেছে, নিজের বোনের নামে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন টিউলিপ। এতে এক আইনজীবীর জাল সই ব্যবহার করা হয়েছিল।

দুর্নীতির অভিযোগে কাউকে বিচারের আওতায় আনা এবং দুর্নীতির ঘটনা তদন্তের এখতিয়ার রয়েছে দুদকের। সংস্থাটি জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ-সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বৃহত্তর তদন্তের অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ হাসিনার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনছে তারা। দুদকের দাবি, আইন লঙ্ঘন করে শেখ হাসিনা ও তার স্বজনেরা সরকারি জমি বরাদ্দ নিয়েছিলেন। দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘এটি হিমশৈলর চূড়ামাত্র। বর্তমানে দুদকে তদন্তাধীন আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে, যেগুলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরাট দুর্নীতি তুলে ধরবে।’

আরও পড়ুনঃ  লন্ডনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের ওপর হামলা

দুদক দাবি করেছে যে পূর্বাচলের নিউ টাউন প্রকল্পের ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি অবৈধভাবে শেখ হাসিনা, তার সন্তান ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন, ঢাকায় টিউলিপের মালিকানায় আরেকটি সম্পত্তি থাকায় পূর্বাচলে জমি বরাদ্দের শর্ত অনুযায়ী, তিনি প্লট পাওয়ার যোগ্য নন। তবে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ম লঙ্ঘন করে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন।

দুদকের অভিযোগ, বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে ঢাকার গুলশান এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। ওই নথিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের সিল রয়েছে। তবে এই আইনজীবী বলেছেন, তিনি ওই নোটারি করেননি। সিলটি তার হলেও স্বাক্ষর তার নয়। আর সিরাজুল ইসলাম তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তিনি শুধু নিজের আইনি চেম্বারে বসে নথিপত্রে নোটারি করে থাকেন। টিউলিপ সিদ্দিক বা আজমিনা সিদ্দিকের সঙ্গে তার কোনো পূর্বপরিচয় নেই।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ইসরায়েলে

নথিটি একটি হেবা দলিল, মূলত ইসলামি আইনসম্মতভাবে কাউকে সম্পত্তি উপহার দেয়ার দলিল এটি। এটি করা হয়েছিল ২০১৫ সালে, তখন টিউলিপ লেবার পার্টির এমপি ছিলেন, তবে মন্ত্রিত্ব পাননি। দুদক অভিযোগ করেছে যে ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিকানা গোপন রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে ওই ভুয়া নোটারি করা হয়েছিল।

দুদকের অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘এই অভিযোগগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এই বিষয়গুলো নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি এবং তিনি এই দাবিগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।’

আরও পড়ুনঃ  বন্ধ ফ্ল্যাটে মিলল ৯৫ কেজি সোনা, ৯০ কোটি টাকা

প্রসঙ্গত, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’–এর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদে ইস্তফা দেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ