ভূমিকম্পে ভবন ভেঙে পড়ায় তুরস্কে এক নির্মাতাকে ৮৬৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এই দণ্ড ঘোষণা করেন দেশটির একটি আদালত। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ ভূমিকম্পে তরস্কে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল এবং সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। পরপর ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৭ মাত্রার দুটি ভূমিকম্পে হাজার হাজার বহুতল ভবন ধসে পড়ে। এতে তুরস্কে ৫৩ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। আর সিরিয়ায় মারা যায় আরও ৬ হাজার।
ওই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদানায় একটি ১৪ তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধ্বংস হয়। এতে ভবনের ৯৬ জন বাসিন্দার মৃত্যু হয়।
১৯৭৫ সালে নির্মিত ভবনটি ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই এর নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কারণ ভবনটির অবস্থান ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেক দূরে (প্রায় ২০০ কিলোমিটার)।
এ ঘটনায় ভবনটি নির্মাণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হাসান আলপারগুন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। আনাদোলু নিউজ এজেন্সির মতে, হাসান আলপারগুনকে শুক্রবার ‘ইচ্ছে করে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ও আহত করায়’ দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ভূমিকম্পের দিন আলপারগুন তুর্কি-সমর্থিত উত্তর সাইপ্রাসে পালিয়ে যান বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। এর এক সপ্তাহ পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। বিচারের সময় বিশেষজ্ঞরা জানান, ভবনের মূল কলাম নির্মাণে বড় ত্রুটি এবং ব্যবহৃত সিমেন্ট-বালির মানে গুরুতর ঘাটতি ছিল।
তবে আলপারগুন আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই তিনি ভবন নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু তার এই যুক্তি ধোপে টেকেনি।
গত বছরের নজিরবিহীন ওই ভূমিকম্পে বহু ভবন ভেঙে পড়ায় সেই সময়ই এগুলোর নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এরপর নির্মাণের সাথে জড়িত ২৬০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। চলতি বছর তাদের কয়েকজনের বিচার শুরু হয়েছে।