Saturday, June 28, 2025

‘১০ হাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে খুন করেছে আ.লীগ’

আরও পড়ুন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার গত ১৫ বছরে বিএনপিকে দমন করতে গিয়ে সিলেটের ইলিয়াস আলীসহ দলের অন্তত ৫২২ নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ‘গুম’ ছাড়াও বিএনপির প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীকে খুন করেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ। হাসিনার রোষাণলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন আরও ১০ লাখ নেতাকর্মী। এর পরও রাজপথ ছাড়েনি বিএনপি। গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। তাই এই অর্জনকে বৃথা যেতে দেব না।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আহমেদ আযম খান বলেন, নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাণ্ডারি হয়েছেন। আমরা বিএনপি তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছি। এই সরকারের কাছে আমাদের একটাই কথা, ১৭টি বছর রক্ত দিয়ে আন্দোলন করেছি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিজয় অর্জন হয়েছে। জনগণ মুখিয়ে আছে ভোট দেওয়ার জন্য।

আরও পড়ুনঃ  ২৪ ঘণ্টায় ঢামেকে ১৯ মরদেহ

তিনি আরও বলেন, ইউনূসের সরকারকে বলব আপনি যত প্রয়োজনীয় সংস্কার করুন, এরপর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যতদিন বাংলাদেশ—এই সংস্কার একটার পর একটা চলতে থাকবে। তাই এটার শেষ নেই, দিন যাবে একটা করে নতুন ইস্যু আসবে, সেই সংস্কার আমরা করব। তাই এই আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে আপনার কাছে চাওয়া, মৌলিক সংস্কার শেষ করে আপনি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। আমরা আপনার সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মানুষকে নির্বাচনী কাফেলায় একত্রিত করব।

আহমেদ আযম খান বলেন, আর রক্তের খেলা নয়, আর কোনো ফ্যাসিবাদকে আমরা ফেরত আসতে দেব না। আগামী দিনে আমরা গণতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দেখতে চাই। সেই বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আজ বাংলাদেশ যেভাবে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস পালিত হচ্ছে, আমরা অভিনন্দন জানাই।

আরও পড়ুনঃ  ‘আমি ঘুমাতে পারি না, সারাজীবনে এত কবর খুড়িনি’

তিনি বলেন, এই আত্মত্যাগে শেষ ৩৬ দিনে বিএনপিসহ ছাত্র-জনতা প্রায় ৮৫০ জন শাহাদাতবরণ করেছেন। যার মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মী ৪২২ জন। আমি সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিসিক সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ ও কুঠির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।

আরও পড়ুনঃ  শাবান মাহমুদের চুক্তি বাতিল

বেলা ৩টা থেকে শুরু হয় সমাবেশের মূল কার্যক্রম। তবে দুপুর থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন সিলেট বিভাগের নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ।

এর আগে বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে সকাল থেকে খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে আলিয়া মাঠে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। এতে ঢল নামে নেতাকর্মীদের। সিলেট বিভাগের চার জেলা ও উপজেলা থেকে বাস-ট্রাক, পিকআপে করে আসতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের। এ সময় তাদের হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা।

এ ছাড়া বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলী ও ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনারসহ সরকার পতনের আন্দোলনে নিহতের ছবি সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। এদিন স্লোগানে-স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে মহানগরীর রাজপথ। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়ে রেজিস্ট্রি মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

সর্বশেষ সংবাদ