Wednesday, March 19, 2025

অর্থাভাবে নিজেদের কিডনি বিক্রি করছেন মিয়ানমারের নাগরিকরা

আরও পড়ুন

সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের পর থেকে টালমাটাল মিয়ানমার। দেশটিতে অব্যাহতভাবে সংঘাত লেগেই আছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সক্রিয় রয়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ফলে একের পর এক সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে দেশটিকে।

মিয়ানমারের পরিস্থিতি এতটাই তলানিতে ঠেকেছে যে দেশটির পাঁচ কোটি ৪০ লাখ মানুষের প্রায় অর্ধেকই এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। এমনকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির দিকে ঝুঁকছেন অনেকে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের তিন বছর পরে দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক দরিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) গবেষকরা বলছেন, ২০১৭ সালের পর দারিদ্র্য দ্বিগুণ হয়েছে। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির পথে হাঁটছে দেশটির দরিদ্ররা। এ জন্য কাজ করছে এজেন্টরাও। যদিও তা কোনোভাবে আইনসিদ্ধ নয়।

আরও পড়ুনঃ  সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলল আজ

অর্থাভাবে কিডনি বিক্রি করা ব্যক্তিদের একজন ডেলিভারি চালক মং মং। ২০২২ সালে তিনি নিজের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য ফেসবুকে পোস্টও করেন তিনি। পরে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ভারতে তার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি হয়। এক চীনা-বর্মী ব্যবসায়ী তিন হাজার ডলারে তার কিডনি সংগ্রহ করেন।

জাতিসংঘের ২০১৯ সালের তথ্যানুসারে, মং মংয়ের কিডনি বিক্রির টাকা মিয়ানমারের শহরের কোনো পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রায় দ্বিগুণ ছিল।

মং মং বলেন, আমার একটি কিডনি আছে। আর আর বেশি হলেও ১৫ থেকে ২০ বছর বাঁচব। এরপর আমার মৃত্যু হবে। তবে এতে কোনো আফসোস নেই আমার।

আরও পড়ুনঃ  হাড় হলেও ফেরত চান আত্নীয় স্বজনরা

তিনি বলেন, আমার জীবন দুর্বিষহ না হয়ে উঠলে আমি কখনও এটি করতাম না। চাকরি নেই, ঘরে খাবার নেই। ফলে পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে স্ত্রী সন্তানসহ আমরা প্রায় মরতে বসেছিলাম।

কেবল তিনি নয়, মিয়ানমারে এমন আরও অসংখ্য লোক রয়েছেন যারা অর্থের জন্য শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করছেন।

মিয়ানমারে এ ব্যবসার জন্য অনলাইন এজেন্ট রয়েছেন। এসব এজেন্টদের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রয়োজনীয় নথি জাল এবং অস্ত্রোপচার করে থাকেন। ভারতে অঙ্গ বিক্রি অবৈধ। বিরল কিছু ব্যক্তি ছাড়া কেবল আত্মীয়দের অঙ্গদানের অনুমতি রয়েছে। এজন্য এজেন্টরা আইনজীবী এবং নোটারিদের সহায়তায় জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

আরও পড়ুনঃ  সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

সিএনএন জানিয়েছে, তারা এ সংক্রান্ত অন্তত তিনটি ফেসবুক গ্রুপ খুঁজে পেয়েছে। এরপর এসবের সঙ্গে জড়িত অন্তত দুজনের সঙ্গে কথা বলেছে তারা। অর্থের অভাবের কারণেই এসব কাজে জড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ সংবাদ