জাতিসংঘে ভাষণেই বোঝা গিয়েছিল লেবাননের সশস্ত্র সংগঠনের ওপর কতটা ক্ষিপ্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ভাষণ দিয়ে বের হয়েই যেন পণ করেন, তার ঘুম হারাম করে দেওয়া হিজবুল্লাহ প্রধানকে তিনি আর দুনিয়াতে রাখবেন না। এরপরই সর্বশক্তি দিয়ে লেবানেন ঝাঁপিয়ে পড়ে নেতানিয়াহু বাহিনী। চালানো হয় মুহুর্মুহু বিমান হামলা। ফেলা হয় টনকে টন বোমা।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ১৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তু লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এমন ৮৫টি বাংকার বিধ্বংসী বোমা ফেলা হয়েছে যার প্রতিটি বোমার ওজন ছিল ১ টন করে।
এসব বোমার তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৮৫ টন বোমা ফেলা হয় বৈরুতের বিভিন্ন এলাকায়। এমন নারকীয় হামলায় প্রাণ হারান- ইসরায়েলের বুকে কাঁপন ধরানো নেতা- হাসান নাসরুল্লাহ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়ার মতো ভয়ংকর এই বোমা আগেই পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসনের নীল নকশায় এমন তাণ্ডব চালানোর সাহস করেছে তেলআবিব।
তবে ছেড়ে কথা বলছে না লেবাননেন সশস্ত্র গোষ্ঠীটিও। তারাও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছে রকেট হামলা। বিশেষ করে ইসরায়েলের রামাত ডেভিড বিমানঘাঁটি ও পশ্চিমে আল-জালিল অঞ্চলের কাবরি বসতিতে ভয়াবহ হামলা চালায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। হামলায় ফাদি-১ ও ফাদি-৩ রকেট ব্যবহার করা হয়। তবে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক অস্ত্রের কাছে খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না হিজবুল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শুক্রবার রাতে দক্ষিণ বৈরুতের হামলা ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। প্রাণ বাঁচাতে যে যেভাবে পাড়ছে পালানোর চেষ্টা করছে। আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়াসহ প্রতিবেশি দেশগুলোতে। গাজার মতো এই যুদ্ধও দীর্ঘায়িত হতে পারে বলেও শঙ্কা করছেন কেউ কেউ।