Wednesday, June 25, 2025

‘আপনে যোগাযোগ কইরেন, চার্জশিট থেকে নাম কেটে দিমুনি’

আরও পড়ুন

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবর আলম লাভলুর সঙ্গে বকশীগঞ্জ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জহুরা বেগমের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। ওই অডিও রেকর্ডে মাহবুবর আলম লাভলুকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনে যোগাযোগ কইরেন, চার্জশিট থেকে নাম কেটে দিমুনি।’

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুই নেতার কথোপকথনের ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কথোপকথনটি তুলে ধরা হলো—

জহুরা: আসসালামু আলাইকুম ভাই।

লাভলু: ওয়া আলাইকুম সালাম। ভালো আছেন?

জহুরা: কই ভালো ভাই? শেষ পর্যন্ত থাকবার দিলেন কই।

লাভলু: আপনে গড়ে এলাকার গামা উকিলে এগুলো করছে।

জহুরা: হ। গামা আর ইয়ে মানিক ভাই (বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর) বলে এগুলা জানেই।

আরও পড়ুনঃ  ইবনে সিনার বিলবোর্ডে ভেসে উঠল ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’

লাভলু: মানিক ভাই আপনের বিষয়টা জানে না।

জহুরা: মামলার তালিকা বলে না দেখে দেয় না। থানায় দেওয়ার আগে বলে তালিকা দেইখা দে। এখন আমাদের ভাইস চেয়ারম্যানি ফেরত দিবো? এখন এগুলোর মধ্যে মামলা দিয়া থুইলে কেমনে কী করি!

লাভলু: ঠিকই আছে। মামলার মধ্যে পইরা থাকলে আরেক ঝামেলা।

জহুরা: নাম কি চার্জশিট থেকে কাটা যাবো?

লাভলু: আপনে আমার সাথে যোগাযোগ কইরেন। চার্জশিট থেকে আমি নাম কেটে দিমুনি।

জহুরা: এখন কোনো কিছু করা যাবে না?

লাভলু: এখন মানিক ভাইয়ের সঙ্গে বসে কথা বলতে হবে।

জহুরা: আমি তো এখন মামলার ভয়ো বের হতে পারছি না। উপজেলা থেকে কাগজপত্র সব আইসা পরতাছে। কোর্টে যাইতে বলতাছে সমন্বয়কারীরা। সবাই রিট করবো। এলাকায় যদি না থাকতে পারি, জনগণের কাজই যদি না করতে পারি, শুধুমাত্র উপজেলার চেয়ারম্যান থাকবো না। আর যে মেম্বাররা পলাতক, তারা থাকতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ  স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকে ৫৮৯ জনের চাকরিচ্যুতি

লাভলু: আপনার বলে রাস্তার ঠিকাদারি কাজ চলতাছে। ওইডা আমাকে দিয়া দেন, আমি করি।

জহুরা: আমার তো নিজস্ব কোনো কাজ নাই। ওইটা আমার না। এইল্লা মানসে বাড়তি কথা কয়। মাইসে ফেসবুকে দিছে কোটি কোটি টাকা কামাইছি; এই করছি, সেই করছি। দয়া করে মানিক সওদাগরের সাথে বইসেন তো দেখি।

এ বিষয়ে জানতে যুব মহিলা লীগের নেত্রী ও বকশীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান জহুরা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান লাভলু বলেন, ‘একটি ছেলে আমাকে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলে মামা উনি তো (জহুরা বেগম) পলাতক। কোনো কাজ করতে পারছে না, একটু কথা বলেন। পরে আমি কথা বলি। আমি সহজ-সরল মানুষ ভাই। তিনি ফোনে কথা বলার শুরুতেই মামলা নিয়ে কথা বলে। মামলার বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। কাজের জন্য তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’

আরও পড়ুনঃ  ঢাবি ছাত্রদলের ২৪২ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ

বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর বলেন, ‘রেকর্ড শুনেছি। এখন একজন যদি বলে যে অমুকের কাছে গেলে মামলা শেষ হবে। কিন্তু আমার কাছে তো আসতে হবে শুনতে হবে। মামলা আমিই করছি, আমিই শেষ করবো।’

জামালপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সজিব খান বলেন, ‘কল রেকর্ডটি এখনও শুনিনি। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ সংবাদ