বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে হাসপাতাল ও কলেজ ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে ছয় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে মেডিকেল কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে দুপুরে এ সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর আগে অভিযুক্ত ১২ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়া চিকিৎসকরা হলেন- শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ও আওয়ামীপন্থি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বরিশাল জেলার সভাপতি ডা. এসএম সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুদীপ হালদার, মেডিসিন ইউনিট-৪ এর ইন্টারনাল মেডিকেল অফিসার ও স্বাচিপ শেবামেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এএসএম সায়েম, বহির্বিভাগের অর্থোপেডিক্স আবাসিক সার্জন ও স্বাচিপ শেবামেক শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, মেডিকেল অফিসার ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী এবং হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. বাকির হোসেন।
এ ছাড়া ইন্টার্নশিপ স্থগিত হওয়া শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা হলেন- ডা. মহসীন বিভা, ডা. আরিফুজ্জামান ইমন, ডা. সাদমান বাকির সাবাব, ডা. প্রীতম দেবনাথ, ডা. অর্ঘ্য বিশ্বাস ও ডা. আসিফুল ইসলাম। এরা সবাই ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং আওয়ামীপন্থি বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ছিলেন।
তথ্য নিশ্চিত করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় চিকিৎসককে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ছয়জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে
এর আগে শনিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী চিকিৎসকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়ে মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকরা। এ সময় তারা হাসপাতাল পরিচালক এবং মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে অভিযুক্তদের অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ এবং হাসপাতাল পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়া চিকিৎসকরা। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের তালিকা করে তৎকালীন সরকারের কাছে প্রেরণ করে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা থেকে বিরত রাখা হয়।