Wednesday, March 19, 2025

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের ১৬ গেট

আরও পড়ুন

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় রাঙামাটির কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র। রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্প্রিলওয়ে বা জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৮ এমএসএল হওয়ায় রোববার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বাঁধের ১৬টি জলকপাটে ৬ ইঞ্চি করে উঠিয়ে পানি ছাড়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হবে কর্ণফুলী নদীতে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে হ্রদের পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পানির লেভেল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্প্রিলওয়ের গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।

আরও পড়ুনঃ  হাসিনাকে ফেরাতে জাহাঙ্গীরের ষড়যন্ত্র, ভাইরাল অডিওতে যা শোনা গেল

এর আগে কাপ্তাই বাঁধের গেট গতকাল শনিবার রাত ১০টায় খোলার কথা থাকলেও তা খোলা হয়নি। প্রত্যাশিত পানির ফ্লো না থাকায় এবং রাতে বাঁধ খোলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ায় সম্ভাবনাসহ সব দিক বিবেচনা করে তা খোলা হয়নি বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছায়। পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর ফলে হ্রদ সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে হ্রদের নিম্নাঞ্চলের অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময়ে যদি এ বাঁধের পানি ছাড়ার ব্যবস্থা করা না হতো, তবে হ্রদসংলগ্ন অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতির সম্মুখীন হতো

আরও পড়ুনঃ  সরকার নয়, জনগণের পক্ষে প্রচার করুন : তথ্য উপদেষ্টা

এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রে দৈনিক পাঁচটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কাপ্তাই বাঁধ বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত ও চট্টগ্রাম থেকে ৬৫ কিলোমিটার উজানে কর্ণফুলি নদীর উপর নির্মিত একটি বাঁধ। কাপ্তাই হ্রদ নামে পরিচিত এটির একটি কৃত্রিম জলাধার রয়েছে যার পানি ধারণক্ষমতা ৫২,৫১,০০০ একর (২১,২৫,০০০ হেক্টর)। বাঁধ ও হ্রদটি নির্মাণের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা। ১৯৬২ সালে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। বাঁধের সঞ্চিত পানি ব্যবহার করে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। ১৯৬২ ও ১৯৮৮ সালের মধ্যে এখানে সর্বমোট ২৩০ মেগাওয়াট (৩,১০,০০০ অশ্বশক্তি) বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর বসানো হয়। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বাঁধ ও একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

আরও পড়ুনঃ  এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ১০ দেশ

এ ছাড়া এখানে ‘কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সোলার পিডি গ্রিড কানেকটেড বিদ্যুৎকেন্দ্র’ নামে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়। পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে বাঁধের পাশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থান।

সর্বশেষ সংবাদ