Thursday, May 29, 2025

সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে ফেসবুকে যা বললেন প্রেসসচিব

আরও পড়ুন

প্রেসসচিব উল্লেখ করেন, সেই দিনগুলোতে আমরা প্রতিদিন সালাহউদ্দিন আহমেদের বিবৃতি পেতাম। ক্রিস এবং আমি তার বিবৃতি আমাদের রিপোর্টে নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করতাম। কারণ সেগুলো ছিল সুগঠিত, তীব্র এবং সোজাসাপটা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি পোস্টটি করেন।

ফেসুবকে শফিকুল আলম লেখেন, নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ, নির্যাতন এবং সীমান্ত পার করে দেয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই সালাহউদ্দিন আহমেদ গোপন স্থান থেকে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালাচ্ছিল। খালেদা জিয়াকে গুলশানের অফিসে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল।

তিনি লেখেন, দলের শীর্ষ নেতারা অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান, কেউ বা ধরা পড়েন পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাবের হাতে। আমি এবং আমার দক্ষিণ এশিয়া প্রধান ক্রিস অটন ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের সাথে গোপনে খালেদা জিয়ার অফিসে প্রবেশ করে তার সাক্ষাৎকার নেই। সেখানে দায়িত্বে থাকা সাদা পোশাকের নিরাপত্তা কর্মীরা ভেবেছিল, আমরা ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনের লোক।

আরও পড়ুনঃ  জানা গেল ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ কোথায় আঘাত হানতে পারে

প্রেসসচিব উল্লেখ করেন, সেই দিনগুলোতে আমরা প্রতিদিন সালাহউদ্দিন আহমেদের বিবৃতি পেতাম। ক্রিস এবং আমি তার বিবৃতি আমাদের রিপোর্টে নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করতাম। কারণ সেগুলো ছিল সুগঠিত, তীব্র এবং সোজাসাপটা। আমি সবসময় মনে করতাম, রুহুল কবির রিজভী দেশের অন্যতম আবেগপ্রবণ রাজনৈতিক কর্মীদের একজন। কিন্তু তার লিখিত বক্তব্যগুলো জটিল এবং জটিল বাক্যে ভর্তি থাকত। একটা ভালো, চিত্তাকর্ষক উদ্ধৃতি খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল।

শফিকুল আলম বলেন, কিন্তু রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদ যখন মুখপাত্রের দায়িত্ব নিলেন, তখন তার পাঠানো বিবৃতিগুলো ছিল বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে সাহসী এবং জ্বালাময়ী। এগুলো যেন বিস্ফোরণ ঘটাত, সরাসরি শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাত। ভাষা ছিল কঠিন, সরাসরি এবং বারবার লক্ষ্যে আঘাত হানত। আমরা নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে শুনেছিলাম, শেখ হাসিনা এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন যে তিনি সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুনঃ  দুপুরের মধ্যে ৮ জেলায় ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

তিনি বলেন, অবশেষে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ অপহৃত হন এবং তাকে গুম করা হয় বলে অনুমান করা হয়। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একজন সাহসী নারী হিসেবে সেই সময় তার স্বামীর মুক্তির দাবিতে যেভাবে লড়াই চালিয়ে গেছেন, তা ছিল অভাবনীয়। তার সেই অবিরাম লড়াই এবং দৃঢ়তা- যেমনটি দেখা গেছে ‘মায়ের ডাক’-এর হাজেরা খাতুন ও তার মেয়েদের কাছ থেকেও। শেখ হাসিনার শাসনামলে এক নিদারুণ প্রতিরোধের ইতিহাস হয়ে আছে। সম্ভবত হাসিনা আহমেদের এই প্রতিবাদ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার সোচ্চার অবস্থান এবং মিডিয়ার নজরই কিছুটা হলেও সালাহউদ্দিনকে সীমান্ত পেরিয়ে শিলং পাঠানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

আরও পড়ুনঃ  আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেবে সিএমএইচ

তিনি আরো বলেন, বিএনপির কিছু তরুণ এবং ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণু কর্মীসহ বেশিভাগ মানুষ এখন দলের ১৭ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামের সেই সাহসী অধ্যায়গুলো ভুলে গেছেন। এবং গতকাল আমরা তার বিরুদ্ধে কিছু জঘন্য অপপ্রচার দেখেছি। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত, এই সংগ্রামগুলো হাসিনার একনায়কতন্ত্রের সবচেয়ে নির্মম কিছু বছর ধরে চ্যালেঞ্জ করেছিল। কিন্তু বেশিভাগই আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের সেই সোনালী এবং গৌরবময় অধ্যায়গুলো ভুলে গেছেন। ভালো সময়গুলো আমাদের সমস্ত খারাপ স্মৃতি মুছে ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ