Thursday, June 26, 2025

বিপ্লবী সরকারের উচিত নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা

আরও পড়ুন

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার, গেল সরকারের বিচার প্রক্রিয়া, বিচার বিভাগের সংস্কারসহ নানা বিষয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অন্তু মুজাহিদ

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলো, অন্তর্বর্তী সরকার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: বাংলাদেশের ইতিহাসের ৫৪ বছর বা পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর—এ দুই আমলকে যদি একসঙ্গে পর্যালোচনা করা হয়, তবে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান নজিরবিহীন ও অভূতপূর্ব। গত ১৬ বছর বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল মিলে এই স্বৈরশাসনকে তাড়ানোর জন্য নানা ধরনের আন্দোলন করেছে, নানা চেষ্টা করেছে। কখনো বিএনপি এককভাবে, কখনো বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে মিলে, কখনোবা অন্যান্য দল মিলে। কখনো তারা সফলতার মুখ দেখেনি। কিন্তু একটা বৈষম্যবিরোধী, কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে দাবানলের মতো সেটা ছড়িয়ে গেছে। ১৭ বছরের যে সরকার ছিল জগদ্দল পাথরের মতো, তাদের এক মাসের মধ্যেই বিদায় করা গেছে, এটা বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বের ইতিহাসে অভূতপূর্ব ও বিরল। বিশ্বের কোনো স্থানেই স্বৈরশাসকের সঙ্গে যুদ্ধ না করে তাদের তাড়ানো যায়নি। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যেভাবে নিরস্ত্র অবস্থায় বুক পেতে দিয়ে, আমাদের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা যে ইতিহাস রচনা করেছে, এটা আপনি ভ্যান গগের চিত্রকর্ম বলেন, পাবলো পিকাসোর চিত্রকর্মের মতো অবিস্মরণীয় এক চিত্রকর্ম, যা তারা ইতিহাসের দেয়ালে অঙ্কন করেছে; এ বিপ্লব অবিস্মরণীয়।

আরও পড়ুনঃ  নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবকে কী বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

বিদ্যমান সংবিধানের সংস্কার না পুনর্লিখনের কথা বলছেন?

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: এ সংবিধান আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য আর কার্যকর থাকতে পারে না। কারণ এ ধরনের সংবিধানের অধীনে ৫০ বা ৫৪ বছর আমরা স্বৈরাশাসন দেখেছি। আমরা শেখ হাসিনার সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাসনও দেখেছি। সুতরাং এ সংবিধানকে সম্পূর্ণভাবে নতুন করে লিখতে হবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী। আজকের ছাত্ররা আমাদের রাজনীতিবিদদের চোখ খুলে দিয়েছে। কী করা উচিত ছিল, কী করেননি আপনারা। তাদের সেই জাতীয় আকাঙ্ক্ষার আলোকে সংবিধানকে নতুন করে সাজানো দরকার। সেই কাজটা এখনই দরকার। এ সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জের মধ্যে এটাও আছে। এ সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেমব্লি তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন বাংলাদেশের কোনো সংবিধান ছিল না। আগের পার্লামেন্ট বসে বাংলাদেশের জন্য সংবিধান রচনা করল এবং সেটা পরবর্তীকালে বৈধতা দেওয়া হলো। বিপ্লবী সরকার সংবিধান প্রণয়ন করবে, এটি চার্টারের মধ্যে থাকবে। আমরা সবাই মিলে এ সংবিধানকে সমর্থন করব। সেটার ভিত্তিতে পরবর্তী পার্লামেন্টে এটা ভ্যালিডেটেড হবে এবং এটার মাধ্যমে নতুন সংবিধান রচনা করা সম্ভব। সুতরাং এ সরকারের এটাও একটা বিরাট কাজ। বাংলাদেশের জন্য নতুন সংবিধান রচনা করে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ  এবার টিকটকে নজর শেখ হাসিনার

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবীদের সরকার। যদিও তারা নিজেরা বিপ্লবী না। কিন্তু বিপ্লবীরা তাদের এখানে এনে বসিয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের বিরাট একটা প্রত্যাশা আছে। আমরা চাইব এ সরকার সফল হোক। আমরা তাদের কিছুটা সময়ও দিতে চাই। অবশ্যই জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা এবং জনগণের যে ত্যাগ ছিল, তার ভিত্তিতে আজকে আমরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাদের এ বিষয়টি প্রতিটি মুহূর্তে মনে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তারা কোনো ভুলভ্রান্তি করবে না।

আরও পড়ুনঃ  মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে আজহারীকে আটকে দিল পুলিশ

সর্বশেষ সংবাদ