সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আজকে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। জাতি এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে বলে তিনি মনে করেন।
জানা গেছে, ১৪ দলের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য দেন। পরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে কথা বলেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত অন্যরা এতে সমর্থন জানান।
তবে বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের নিষিদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এ সময় হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরাও একসময় আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে রাজনীতি করেছি। জনসমর্থন না থাকলে ও জনসমক্ষে আসতে না পারলে রাজনীতি করা যায় না বলেও মত দেন তিনি।
বৈঠকে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বক্তব্য দেন, সমালোচনা করেন। ছাত্রদের বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় বক্তব্যের সময় আরও সচেতন হওয়া দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করা হয়।
কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, এর পরও কেন আন্দোলন? এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের স্বার্থে এদের দমন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। বিভিন্ন পরীক্ষা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষকে নির্মূল করতে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগিতা করা, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুট, নারীদের ধর্ষণ, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানাবিধ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, যা এরই মধ্যে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে প্রমাণ হয়েছে। এসব অপরাধে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন। এরপর ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত আপিল করলেও ২০২৩ সালে ১৯ নভেম্বর তা সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়।