কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের রিমান্ড বাতিলের পর তাকে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কড়া নিরাপত্তায় টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আনা হয়। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক দেলোয়ার হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তার বয়স ১৭ বছর ৩ মাস। আইন মোতাবেক ফাইয়াজ এখনো শিশু।
সহিংসতার মামলায় ফাইয়াজকে গ্রেপ্তার করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেওয়ার ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এরপর রোববার সকালে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। আদালত তখন আইনজীবীকে রিট আকারে উপস্থাপন করতে বলেন। পরে রিট দায়ের করে তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, আদালতের আদেশের প্রয়োজন হবে না। রিমান্ড বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না। তখন হাইকোর্ট বলেন শিশুটির নাম যদি এজাহারে না থাকে তাহলে কেন তাকে কাস্টডিতে নেবেন? বাবা-মায়ের হেফাজতে দিন।
আদালত বলেন, এটা মনে রাখতে হবে সে একটি শিশু। তার নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে দেখতে হবে। শিশু আইনে তার বিষয়টি দেখতে হবে। পত্রিকায় দেখেছি শিশুটির বাবা বয়স প্রমাণের সব কাগজপত্র দেওয়ার পরও ম্যাজিস্ট্রেট বিবেচনায় নেননি।
এদিকে রিট শুনানির আগেই ফাইয়াজের রিমান্ড বাতিল করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ ও শিশু আদালতের বিচারক রোকসানা বেগম হ্যাপী। একই সঙ্গে শিশুটিকে কারাগার থেকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ঢাকা কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফাইয়াজকে যাত্রাবাড়ী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হাজির করা হয় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তাকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিতে শিশুটির পক্ষে তার বয়স প্রমাণের কাগজপত্র দেওয়া হলেও তা বিবেচনায় নেননি সংশ্লিষ্ট বিচারিক হাকিম।