গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রশ্নে উত্তপ্ত দেশের রাজনীতি। দলটিকে ফেরাতে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলছেন, ফ্যাসিস্টদের ফেরা জনগণ মেনে নেবে না। তবে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলছেন, বিচার শেষে দেশবাসী চাইলে ফিরতে পারে আওয়ামী লীগ।
গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মানবতাবিরোধী অপরাধে মন্ত্রী-এমপিসহ বিচার শুরু হয় নানা পর্যায়ের নেতাদের। এর ধারাবাহিকতায় সামনে আসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি।
তবে বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। কোনো দাবিতেই পেছাবে না নির্বাচন।
এই পেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পর ভোটের দাবি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে দাবি করেন, দলটিকে ফেরাতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ নামে নতুন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা চলছে। এর মূলভাগে রয়েছে ভারত। আর সেই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন চৌধুরী ও ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে।
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ
গত ১১ মার্চ দুপুরে একটি ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের।’
তিনিসহ আরও দুজনের কাছে আওয়ামী লীগকে ফেরানো নিয়ে পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা। তিনি লিখেছেন, ‘আপনি দেখবেন, গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।’
তবে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী মনে করেন, বিচার শেষে জনগণ চাইলেই রাজনীতিতে ফিরতে পারে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনার বিচার নয়, আদালতের ন্যায়সঙ্গত বিচার হলে পরে আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে না। তখন কে রাজনীতি করবেন বা করবেন না, সেই দায়িত্ব জনগণ নেবে।’
এর আগে ফেসবুক পোস্টে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মেনে নেবে না জনগণ। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গণহত্যার বিচার ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশও দেখছেন না ডা. শফিকুর রহমান।
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: জামায়াত আমিরআওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: জামায়াত আমির
পোস্টের কমেন্টে জামায়াত আমির লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ৩৬ জুলাই ক্লোজড হয়ে গিয়েছে। নতুন করে ওপেন করার কোনই অবকাশ নেই।’
পোস্টের শুরুতে জামায়াতের আমির বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই। আল্লাহ তাআলার একান্ত মেহেরবানীতে আমরা পবিত্র রমাদানুল কারীম অতিক্রম করছি। বাংলাদেশ ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাক অতিক্রম করছে।’