গাজীপুরে এসপি গার্মেন্টস এন্ড ওয়াশিং লিমিটেড কারখানায় জ্বীন আতঙ্কে হাঠাৎ ১৩ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা শেষে বাসায় পাঠিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে আজকের জন্য কারখানা ছুটি ঘোষনা করে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা (বাঘের বাজার) এলাকায় ওই গার্মেন্টস কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
google news দেশ টিভি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আহত শ্রমিকেরা হলো পারভীন আক্তার (২০), সাবিনা (২০), হালিমা (২২), লিজা (২৪), সানজিদা (২২), তাহমিনা (২১), শিখা খাতুন (২০), লিপি আকতার (১৯), নার্গিস সুলতানা (২০), বিউটি আক্তার (২৪), সানজিদা বেগম (২১), আছমা খাতুন (৪০) এবং হাকিম (২৭)। আহত প্রত্যেকেই বাঘের বাজার হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী চলে গেছে।
আহত নারী শ্রমিক আছমা খাতুন জানান, কয়েকদিন যাবত কারখানায় অনেকে আলোচনা করছে ওয়াশ রুমে জ্বীনের আছর (ভর) রয়েছে। এমন গুজবে কারখানার এক শ্রমিক প্রথমে ভয় পায়। তবে সে কি দেখে বা কি কারণে ভয় পেয়েছে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না। এক জনের দেখাদেখি অন্যরা পড়ে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে স্থানীয় হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হডএ
হাসপাতাল, অসুস্থ শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ তলা ভবনের এসপি গার্মেন্টস এন্ড ওয়াশিং লিমিটেড কারখানায় দুই হাজার দুই’শ শ্রমিক কর্মরত আছেন। সকালে কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন। বেলা সাড়ে ১১টার এক নারী শ্রমিক ওয়াশরুমের ভিতরে প্রবেশ করা মাত্রই হঠাৎ করে দরজা বন্ধা হয়ে যায়। এসময় সে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অসুস্থ শ্রমিক হাকিম বলেন, ঘটনার ওই সময়ে কারখানার নিচে নেমে হৈচৈ (চিল্লাচিল্লি) শুরু করে শ্রমিকেরা। তাদের চিল্লানো শুনে আমিও দৌড়ে নিচে নামার চেষ্টা করছিলাম। এরপর আমার নিশ্বাস ভারী হয়ে শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। এরপর আমি ফ্লোরে পড়ে যাই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে, এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
বাঘের বাজার হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক সিহাব আহাম্মদ ইবনে জামান বলেন, প্রথম যে রোগী আসে সে অজ্ঞান। এরপর আমরা একে একে আরো ১২ জন অসুস্থ শ্রমিককে চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের মধ্যে অনেকে দুর্বলতা থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেকে খিচুনি ও মাথা ঘুড়ে পড়ে গেছে। অসুস্থ শ্রমিকেরা (রোগী) চিকিৎসককে বলেন তাদের মধ্যে থেকে একজন ভয় পেয়েছে। তবে কি দেখে ভয় পেয়েছে তা কেউ বলতে পারে না। একজনের অসুস্থতা দেখে অন্যান্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ১৩ জনের মধ্যে দুই জনকে অক্সিজেন, বাকি ১১ জনকে স্যালাইন এবং বি-ফিফটি ফোর ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। তার প্রত্যেকে এ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর বাসায় চলে গেছে। কী কারণে নারী শ্রমিকেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। হয়তো ভয় থেকে তারা অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকেরা কেন অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলতে পারছি না। গত কয়েকদিন আগেও এ করাখানার ১৫ জন নারী শ্রমিক ভূত আতঙ্কে অসুস্থ হয়েছিল।
এসপি গার্মেন্টস এন্ড ওয়াশিং লিমিটেড কারখানার দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চান নি।
প্রসঙ্গ, ১৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল সোয়া ৯টার দিকে একই কারখানায় ১৫ নারী শ্রমিক ভূত আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।