Sunday, December 22, 2024

বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত টিউলিপকে সমর্থন দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারকে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা) অভিযুক্ত করার পরও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপকে পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার অন্যতম দায়িত্ব অর্থনৈতিক জালিয়াতি রোধ করা। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে অভিযোগ এনেছে তা তিনি অস্বীকার করেছেন।

ডাউনিং স্ট্রিট শক্তভাবে টিউলিপ সিদ্দিককে সমর্থন জানালেও স্টারমার নতুন করে এ ঘটনায় ঝামেলায় পড়েছেন। কারণ গত মাসে ট্রেজারি বিভাগের পরিবহন মন্ত্রী লুইস হেইগ আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেন। যার কারণে বিরোধীদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

টিউলিপ সিদ্দিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনঝি। যিনি জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আগস্ট মাসে পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।

হাসিনার শাসনামলে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। এছাড়া তিনি এবং তার মন্ত্রীরা গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তদন্তের মুখোমুখী হচ্ছেন। সম্প্রতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। যদিও ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতি এবং অপরাধ তদন্তে কাজ করছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন। একই সঙ্গে দুদক টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও অধিকতর তদন্ত করছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য রাশিয়ান সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যস্থকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিউলিপ। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর টিউলিপ অর্থ আত্মসাতের ৩০ শতাংশ নিজে নিয়ে নেন। বাকী অর্থ শেখ হাসিনা ও তার পরিবার আত্মসাৎ করে। ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। তবে টিউলিপ সিদ্দিকের অভিযোগ তিনি পরিবারের সদস্য হিসেব ওই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

এ অবস্থায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার অফিসের মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সিদ্দিকির ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখেছেন এবং তিনি তার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

তবে টিউলিপের অর্থআত্মসাতের বিষয়ে জড়িত থাকার পুরোপুরি অস্বীকার করেননি প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্য বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে পারবো না, একই সঙ্গে মিডিয়াতে প্রচারিত অমিমাংসিত বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে বাংলাদেশ ১০ বিলিয়ন ইউরো চুক্তি স্বাক্ষর করে। যেখানে সিদ্দিকসহ তার খালা শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধ ৪ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তদন্তের স্বার্থে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করেনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ