৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিনটি নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট করেছেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের শিক্ষিকা রুমা সরকার। তিনি ৫ আগস্টকে ‘নারীর অন্তর্বাস দিবস ও জামাতীর পেচ্ছাপ দিবস’ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা রুমা সরকার সহকারী অধ্যাপক। তিনি বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগে কর্মরত।
জানা গেছে, গত ১৮ অক্টোবর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা রুমা সরকার ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে বলা ছিল, ‘৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে : উপদেষ্টা নাহিদ’। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘৫ই আগস্ট নারীর অন্তর্বাস ও জামাতীর পেচ্ছাপ দিবস।। রুমা সরকার, ১৮/১০/২০২৪’। যদিও রবিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় তার ওই পোস্টটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত শনিবার দেয় এক পোস্টে রুমা সরকার লিখেছেন, ‘আপনারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করলেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়কের মাথায় প্রস্রাব করলেন। আপনারা একজন মায়ের বয়সী নারীর ব্রা,পেন্টি নিয়ে নাচানাচি করলেন। গণভবন থেকে আপনারা চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ, টিভি, শাড়ি, গয়না, হাঁস মুরগি, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, পাঙাস মাছ, লাউ শাক, থালা বাটি, টয়লেটের কমোট লুট করে নিয়ে গেলেন। আপনারা একজন মাতৃস্থানীয়ার শোবার ঘরের খাটে গিয়ে জুতাসহ শুয়ে পড়লেন! এসব সত্য। এসব ইতিহাস। আপনারা বাঙালির ইতিহাসের সূতিকাগার, ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়িটি, যা কি-না জাতীয় মিউজিয়াম, সেটিকে পুড়িয়ে দিলেন। বাংলাদেশের জন্ম মানবেন, মুজিব মানবেন না! এটা সত্য। এটা ইতিহাস। আপনারা দেশসেবা করার সুযোগ পেয়েও দেশের উন্নয়ন নয়, ধর্মের লেবাসে ধর্মান্ধতা ছড়াচ্ছেন। এসব সত্য। এসব ইতিহাস।’
বিতর্কিত ওই পোস্ট নিয়ে মুহুর্তে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক সাইদুর রহমান রুমা সরকারের ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে লেখেন, উনি ঢাকার বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি ৫ আগস্টকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ৫ আগস্ট নাকি নারীর অন্তর্বাস ও জামাতীর পেচ্ছাপ দিবস। তিনি একজন সরকারি চাকুরে। কি দুঃসাহস এদের? এরা এতো সাহস পায় কোথা থেকে। অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা রুমা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্বে থাকা কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে নিজ দপ্তরে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন শাখার উপপরিচালক অধ্যাপক মো. শাহজাহান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবো।