Wednesday, March 19, 2025

অনলাইন জুয়ার দুর্গে আবারও যৌথবাহিনীর হানা, গ্রেপ্তার

আরও পড়ুন

মেহেরপুরের মুজিবনগরে অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট মোরশেদ আলম লিপুকে ধরতে তার বাগানবাড়িতে আবারও অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। অভিযান পরিচালনার সময় লিপু কৌশলে পালিয়ে যেতে পারলেও গ্রেপ্তার হন লিপুর অন্যতম সহযোগী পরাগসহ আরও তিনজন। পরাগ ‘ওয়ান এক্স বেট’-এর বিকাশ এজেন্ট চ্যানেল পরিচালনা করে।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৮টার সময় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর-বিশ্বনাথপুর গ্রামের মধ্যবর্তী সড়কে অবস্থিত বাগানবাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান।

আটকরা হলেন- মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে রফা গাইনের ছেলে ক্যাসিনো এজেন্ট মো. সাহরিয়ার আজম পরাগ (৩০), একই এলাকার মো. রায়হানের ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান (৩৫), ওই এলাকার মো. আইর উদ্দীনের ছেলে রিপন (২৭) এবং ভবানীপুর গ্রামের উকিল সেখের ছেলে মো. সন্তোষ সেখ ( ৩২)।

আরও পড়ুনঃ  বাবাকে হত্যা করে থানায় এসে মেয়ের স্বীকারোক্তি

এ সময় তাদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়া পরিচালনায় ব্যবহৃত সন্দেহে পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল এবং মাদক উদ্ধার করা হয়।

অনলাইন জুয়া নিয়ে অনুসন্ধানে একাধিক সূত্র জানায়, শিবপুর গ্রামের রফা গাইনের ছেলে পরাগ ‘ওয়ান এক্স বেট’-এর বিকাশ এজেন্ট চ্যানেল দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ার অবৈধ লেনদেনে যুক্ত হয়ে বিদেশে অর্থপাচার করে যাচ্ছে। আর এই অর্থ পাচারের কমিশন থেকে পরাগ ও তার পরিবারের সদস্যরা বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। নিজ গ্রামে তৈরি করেছেন রাজপ্রাসাদসম একটি বাড়ি।

মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান কালবালাকে বলেন, যৌথবাহিনী তাদের অভিযানে আটক ৪ জনকে আলামতসহ হস্তান্তর করেছে। আপাতত একটি নিয়মিত মামলা করে আটকদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। জব্দ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ফোনগুলোর সঙ্গে অনলাইন জুয়ার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  আপত্তিকর অবস্থায় নারীসহ এসআই আটক

মুজিবনগর কোর্ট জিআরও জানান, মুজিবনগর থানা পুলিশ যৌথবাহিনীর হাতে আটক চারজনকে একটি মাদক মামলা দিয়ে শুক্রবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত আ.লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে রফা গাইনের ছেলে মো. সাহরিয়ার আজম পরাগ ও আইর উদ্দীনের ছেলে রিপনকে জামিনে মুক্তি দেন। অপর দুই আসামি শিবপুরের মো. রায়হানের ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান এবং ভবানীপুর গ্রামের উকিল সেখের ছেলে মো. সন্তোষ সেখকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

ইতোপূর্বে অনলাইন জুয়া নিয়ে সিরিজ রিপোর্ট প্রকাশ শুরু হলে ক্যাসিনো এজেন্টদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্ত একজন সাব এজেন্ট কালবেলাকে জানান, অনলাইন জুয়া ও এজেন্ট চ্যানেল কিভাবে পরিচালিত হয়। তিনি প্রমাণ সরবরাহ করেছিলেন রাশিয়া থেকে পরিচালিত হওয়া রেডি অ্যাপস এবং ম্যানেজমেন্ট অ্যাপসের ব্যাপারে। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, আগে সরাসরি রেডি অ্যাপসের এজেন্ট দেওয়া হলেও এখন আর কাউকে নতুন এজেন্ট দেওয়া হয় না। তবে মাস্টার এজেন্টদের রেফারেন্সের ভিত্তিতে নতুনদের ম্যানেজমেন্ট অ্যাপসের পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া এজেন্ট নিয়োগ সম্পূর্ণ হলে ৮ জন করে গ্রুপ করে দেওয়া হয়। তারা হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে সংযুক্ত থাকে। প্রতি এজেন্ট প্রত্যেকবার অ্যাপে সংযুক্ত হতে গেলে গ্রুপের মাধ্যমে নতুন পিন নম্বরের নোটিফিকেশন আসে। কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এজেন্টকে আটক করতে এলে গ্রুপে নোটিফিকেশন দেওয়া মাত্র গ্রুপের সব তথ্য মুছে ফেলা হয়।

আরও পড়ুনঃ  মসজিদের মিম্বার থেকে দুই দেশকে সতর্কবাতা বিদ্রোহী নেতার

সর্বশেষ সংবাদ