Tuesday, March 18, 2025

কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যু, ৪ লাখ টাকায় রফাদফা

আরও পড়ুন

কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ ইমরান হোসেন (২১) নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা।

গতকাল রোববার রাত ১০টায় কুমিল্লা নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকার ট্রমা সেন্টার নামের একটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

ইমরান হোসেন নগরীর দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে। এ ঘটনায় হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে হাসপাতালে একটি গোপনকক্ষে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদল নেতা ফখরুল ইসলান মিঠু কুমিল্লা মহানগর ড্যাবের এক নেতার মাধ্যমে চার লাখ টাকায় নিহতের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতায় যায় কুমিল্লা ট্রমা সেন্টার হাসপাতাল। সমঝোতাপত্রে অভিযুক্ত দুই নেতার স্বাক্ষরসহ একটি পত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

আরও পড়ুনঃ  সারা দেশে কমিটি গঠন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

এদিকে ইমরানের মা নাজমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, বুকের অসুখ জনিত কারণে গত ১৫ দিন আগে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ইমরান হোসেন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল। গত বুধবার তার অপারেশনের জন্য পুনরায় তাকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক আতাউর রহমান গত শনিবার ইমরান হোসেনের অপারেশন করেন। তার অভিযোগ ‘ভুল চিকিৎসার’ কারণে রোববার বিকেলের দিকে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা অবস্থায় ইমরান হোসেন মারা যান।

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, ইমরান আইসিইউতে মারা যাওয়ার পরও সে জীবিত আছে বলে দুইবার প্রায় ২৭ হাজার টাকার ওষুধ নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর মৃত্যুর পরও দেখতে না দিয়ে রোগী বেঁচে আছে বলে জানিয়ে আরও প্রায় তিন লাখ টাকার বিল হাতিয়ে নেয়।

আরও পড়ুনঃ  কক্সবাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গুলি করে সমন্বয়কের বাবাকে খুন

নিহত ইমরানের চাচা জাকির হোসেন বলেন, আমার ভাতিজাকে তারা সামান্য অপারেশনের কথা বলেছিল। কিন্তু তারা সাত ঘণ্টা ওটিতে রেখেছিল। পরে রোগীর সমস্যা হয়েছে এ কথা বলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার কথা বলে। আমরা রাজি হই। কিন্তু লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর প্রায় ৩ দিন হয়ে গেলেও তারা আমাদের রোগীকে দেখতে দেয়নি। পরে নানা অযুহাতে আইসিইউতে ঢুকে দেখি যে আমাদের রোগী মৃত। কিন্তু তারপরেও তারা আমাদের কাছ থেকে মৃত রোগীর চিকিৎসা করানোর জন্য পরীক্ষা ফি ও ওষুধ কিনিয়েছে। তারা আমাদেরকে ২৫ হাজার টাকার অপারেশনের কথা বলে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেয় ধাপে ধাপে। একজন রোগীর ৩ দিনে লাখ টাকার ওষুধ কিভাবে লাগে। তাদের গাফিলতির কারণে আমাদের রোগী মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতার মৃত্যু

এ বিষয় অভিযুক্ত কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদল নেতা ফখরুল ইসলান মিঠু বলেন,আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ বলেন আমি এই বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সর্বশেষ সংবাদ