সব মসজিদে একই খুতবা দেওয়ার জন্য ইমাম-খতিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এছাড়া জুমার খুতবাকে প্রাণবন্ত করতে আরবি খুতবার বিষয়বস্তু আগের বক্তব্যে তুলে ধরারও পরামর্শ দেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেলা পর্যায়ের ইমাম-খতিবদের নিয়ে বাংলাদেশ মসজিদ মিশন আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
জামায়াত আমীর বলেন, মসজিদে নববীই ছিল রাসুল (সা.) এর পার্লামেন্ট, মসজিদই ছিল কেবিনেট। সেখানে বসেই সবকিছু পরামর্শ করা হতো, সেখানেই তিনি বিচার করতেন। এখন মসজিদে ইমাম-খতিব বয়ান দেন তা অনেকেই মিস করেন। পবিত্র জুমার যে প্রাণশক্তি তা পরিষ্কার করা হয়নি।
তিনি বলেন, অনেকে আল্লাহর ভয়ে মসজিদে রাজনৈতিক বা অন্য আলোচনা করতে নিষেধ করেন। বাইরে মনে হয় আল্লাহ নেই! কোরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাজের চিত্রটা জাতির সামনে তুলে ধরতে ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াত আমীর। এক্ষেত্রে মসজিদ মিশনকে সমন্বয় করারও পরামর্শ দেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে সমাজকে মসজিদ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ অবস্থা একদিনে করা হয়নি। এর কিছু দায় ওলামাদেরকে নিতেই হবে।
তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনের তাফসির বা হুবহু বাংলা অনুবাদও যদি কেউ একবার পড়েন তাহলে তা তার হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন, মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করা হয়-এমন কোন কথা বলা ঠিক নয়। ধারণা করে কোন কথা বলতে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে নিষেধ করেছেন। সঠিক কথা মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে ইমাম-খতিবদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ওলামায়ে কেরাম এক হলে বাংলাদেশ জান্নাতে পরিণত হবে জানিয়ে জামায়াত আমীর বলেন, এখন পর্যন্ত কোন আলেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এত জুলুম-নির্যাতনের পরও তারা কীভাবে এত শান্ত থাকতে পারেন। তারা বিশ্বাস করে যে, হিংসা-বিদ্বেষ আল্লাহ পছন্দ করেন না। এসব আলেম-ওলামা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান তাহলে দেশ হিংসামুক্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ আজ শুক্রবার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় মাসব্যাপী লিফলেট বিতরণ উদ্ভোবনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আবদুস সালাম। ছবি : এনটিভি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে শুধু দলের নয়, পুরো দেশের দায়িত্ব নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় মাসব্যাপী লিফলেট বিতরণ উদ্ভোবনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুস সালাম এসব কথা বলেন। আবদুস সালাম বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর মানুষ গণতন্ত্রের স্বাদ পায়নি। দেশের মানুষ নির্যাতিত-নিপীড়িত ছিল। আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সব কিছু ধ্বংস করেছে। তাই আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে, আবার সবকিছু ধ্বংস করবে। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে চায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে আবদুস সালাম বলেন, আজকে দেশ সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আর আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে ৩১ দফার মধ্যমে দেশের সব কিছু সংস্কারের কথা অনেক আগেই বলে দিয়েছি। আপনারা দেশের সংস্কারের কথা বলছেন? বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কারের উদাহরণ হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান যে সংস্কার করেছেন, বাংলাদেশে ওই সংস্কার আর কেউ করতে পারবে না। আবদুস সালাম আরও বলেন, আজকে শেখ হাসিনা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো অবস্থান করছে। তাই আপনাদেরকে যার যার এলাকায় সুসংগঠিত হতে হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে আপনাদের বলতে চাই, বিএনপি সব সময় আপনাদের সাথে আছে। আবদুস সালাম বলেন, ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে, মোহাম্মদপুরে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। সেই বীরদের আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমরা গত ১৭ বছরে অনেক নেতা-কর্মী হারিয়েছি। অনেকে আহত হয়েছে। আমাদের যুবদলের নেতা রফিককে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছিল। সে সব ঘটনা আমরা ভুলে যাই নাই। তাই আমরা আওয়ামী দোসরদের বলতে চাই, আর মাঠে নামার চেষ্টা করিয়েন না। এবার আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ইনশাআল্লাহ্, জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। যারা সীমান্তের ওপারে বসে ষড়যন্ত্র করছেন, তারা কী সীমান্তের এপারে আসতে পারবে? এবার আর ভারতে বসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানানো যাবে না, হওয়াও যাবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ইকবাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম-আহ্বায়ক হাজী ইউসুফ, মহিলা দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রুনা লায়লা, জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জামাল হোসেনসহ মোহাম্মদপুর, আদাবর এবং শেরেবাংলা নগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও জেনারেল সেক্রেটারি ড. খলিলুর রহমান মাদানীর পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের সেক্রেটারি ড.রেজাউল করিম, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী প্রমুখ।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কি-নোট উপস্থাপন করেন কাতার ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. আলী আল কারাদাগি।