Friday, January 10, 2025

সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কা লাগা সেই কিশোর এখন কেমন আছেন?

আরও পড়ুন

রংপুরে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত কিশোর লিখন মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখন মারা গেছে বলে যে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তা সঠিক নয়। বর্তমানে লিখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত লিখন মিয়া রংপুর মহানগরীর ১১নং ওয়ার্ডের মধ্য বিনাটারি গ্রামের মেহেরুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় কেরানীরহাট আল ইখলাস দারুস সুন্নাত দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে চার বন্ধু মারুফ, রনি, মোরসালিন ও আবু সিদ্দিকের সঙ্গে ঘুরতে বের হন লিখন মিয়া। তারা একসঙ্গে পার্শ্ববর্তী সিংগিমারী ব্রিজ এলাকায় যান। সেখানে বন্ধুরা মিলে রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তুলতে প্রস্তুতি নেয়। এসময় রেললাইনের খুব কাছাকাছি থাকা লিখন মিয়া ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ  আমার সঙ্গে খেলার চেষ্টা করবেন না: সাকিব

স্থানীয়রা জানান, ওইদিন বিকেলে ৪৬২ ডাউন বুড়িমারী লোকাল ট্রেনটি সিংগিমারী ব্রিজ পার হওয়ার সময় চার-পাঁচজন ছোট ছেলে মিলে টিকটক ভিডিও করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেললাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে না দাঁড়ানোর কারণে এমনটি হয়েছে। এটি অসচেতনতর কারণে ঘটলেও অলৌকিকভাবে ছেলেটি বেঁচে গেছে।

লিখনের বাবা মেহেরুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া। এত বড় দুর্ঘটনার পর আল্লাহ্ আমার ছেলেকে নতুন করে জীবন দিয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছেলে এখন সুস্থ আছে। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

লিখনের আহত হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার মা লিলি বেগম বলেন, আমরা তো ঘটনাস্থলে যাইনি। কি হয়েছে সেটাও আমরা জানি না। দুর্ঘটনাস্থল থেকে কাছাকাছি হওয়ায় প্রথমে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রেফার্ড করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দিয়েছে। এখানে ট্রিটমেন্ট চলতেছে। ওর (লিখনের) মাথায় ১৩-১৪টা সেলাই পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ  আরেকটি বিপ্লব হবে, সেটি হবে ইসলামের: গোলাম পরওয়ার

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মৃত্যুর খবরটি গুজব উল্লেখ করে লিখনের বড় ভাই মিথুন বলেন, ফেসবুকে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর দেখে অবাক হয়েছি। এরকম ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠিক নয়। একটা আহত চিকিৎসাধীন মানুষকে নিয়ে এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। আমার ছোট ভাই এখন ভালো আছে। সকল মা-বাবার প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখুন, কোথায় যাচ্ছে, কি করছে এসবের খোঁজ রাখুন। কারণ একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।

দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন লিখনের বন্ধু মোরসালিন। তিনি বলেন, আমরা সবাই ট্রেন থেকে একটু দূরেই ছিলাম। আমি যখন ভিডিও করি লিখন ভাই বুঝতে পারেনি ওনার খুব কাছাকাছি ট্রেন চলে এসেছে। আমাদের অসতর্কতার কারণে এমনটি হয়েছে। বর্তমানে লিখনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে এ শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুনঃ  হাসিনাকে ফেরত না দিলে আমাদের পরের সরকার ভারতকে ক্ষমা করবে না : দ্য হিন্দুকে ড. ইউনূস

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার সময়ের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোরসালিন বলেন, আমরা মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম। বেশ কিছু ছবিও তুলেছি। ট্রেনের সঙ্গে নিজেদের সেলফি তোলার জন্য যখন দাঁড়িয়ে ছিলাম তখন ভুলে চাপ পড়ে ভিডিও রেকর্ড হয়। এ সময় আকস্মিকভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমার এলাকার ভাইয়েরা ফোন থেকে ভিডিওটা নিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাব্বির জানান, ট্রেনের ধাক্কায় আহত সেই ছেলে জীবিত আছে। তার অবস্থা উন্নতির দিকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মর্মান্তিক সেই ভিডিও অনেকের মনেই দাগ কেটেছিল। সেই আহত লিখন নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ