Friday, April 18, 2025

চাকরির বয়সসীমা নিয়ে সমন্বয়ক সারজিসের স্ট্যাটাস

আরও পড়ুন

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ চেয়ে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের এই দাবিকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে নতুন বয়সসীমার কথা তুলে ধরেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চলমান এই আন্দোলন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে সারজিস লিখেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ৩৫ কিংবা ৬৫, কোনোটাই যৌক্তিক না ৷ ৩২ এবং ৬০ নিয়ে ভাবা যেতে পারে।

এদিকে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যূনতম ৩৫ বছর করার দাবির পক্ষে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শাহবাগে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তারা।

গতকাল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন প্লাটফর্মটির প্রতিনিধি রাসেল আল মাহমুদ ও আরিফ ইসলাম ছাড়াও আরও কয়েকজন।

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রদল কর্মীকে মাথায় গুলি করে হত্যা

চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আজ থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়, যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর বিধায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক। গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২০১১ সালে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি না করে সেটি ৩০ বছরেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়। যার কারণে দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোভিড-১৯ এর কারণে প্রায় আড়াই বছর যাবৎ তেমন কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি বা নিয়োগ পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি। উপরন্তু, লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে ১০-১৫ টি বা ততোধিক পরীক্ষা একই দিনে, একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যায় ফলে, পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে অজস্র চাকরি প্রত্যাশী। কোভিড-১৯ এর শুরুতে যাদের বয়স ২৭-২৯ বছর ছিল তাদের বয়স এখন ৩০ বা ততোধিক। ফলে চাকরি প্রার্থীগণ বাস্তবিক অর্থে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ৩০ বছরের পরিবর্তে সাড়ে সাতাশ বছর পেয়েছে। এছাড়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সেশনজটের কারণে সকল সরকারি বা বেসরকারি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করতে ২৭ থেকে ২৮ বছর লেগে যায়।

আরও পড়ুনঃ  দিল্লির সমান ভূমি দখলে নিয়েছে চীন : রাহুল গান্ধী

তারা আরও বলেন, সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব নীতিতে ১৮ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, যুব নীতিতে ৩৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হলেও বর্তমান উচ্চ শিক্ষিত চাকরি প্রত্যাশীদের ৩০ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্বের প্রায় ১৬২টি দেশে এবং সার্কভুক্ত সকল দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। বেকারত্ব দূর করতে ও মেধাভিত্তিক একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠন করতে হলে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং সেই সাথে আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করা খুবই প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ  বাদশাহর সই নকল করে ডিক্রি জারি করেছিলেন সৌদি যুবরাজ

প্রসঙ্গত, চাকরিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আবেদনের বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৩৫, বিজেএস-ডাক্তার-মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩৭, পুলিশের এস আই ও সার্জেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩০ বছর এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী।

সর্বশেষ সংবাদ