Sunday, July 27, 2025

প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন : রিজওয়ানা

আরও পড়ুন

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরে নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলোও এ বিষয়ে একমত বলেও তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত বুধবার দেশের ৬টি সেক্টরের সংস্কার নিয়ে ৬টি কমিশন গঠন বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, এই কমিশনগুলোর কার্যপরিধি এখনো ঠিক করা হয়নি। তারা প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করবে। সিদ্ধান্ত হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই কমিশনগুলোতে সাচিবিক সহায়তা দেবে। প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সম্মেলন শেষে টার্ম অব কন্ডিশন ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে অন্যান্য সদস্য ঠিক করা হবে। আশা করি কর্মপরিধি ঠিক করতে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ লাগবে। আমরা আশা করছি তিন মাসের মধ্যে কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দিতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনা বললেন, আমি পদত্যাগ করেছি

এরশাদ সরকারের সময় এ ধরনের কমিশন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই কমিশনের প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। এবার কী সেটা হবে কী না– এমন প্রশ্নের জবাতে রিজওয়ানা বলেন, এরশাদ সাহেবের সময় আর এবারের বাস্তবতাটাও ভিন্ন, প্রেক্ষিতটাও ভিন্ন। এই সরকার হলো একটা গণঅভ্যুত্থানের ফল। কিন্তু এই প্রতিবেদন আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না সেটা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐক্য এটার সপক্ষে আমরা কতটা গড়ে তুলতে পারি তার ওপর। এজন্য সংস্কারের বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোরও মতামত চাচ্ছি। আর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নিশ্চয়ই এ উপলব্ধি আসছে।

তিনি বলেন, এরশাদ সরকার করে যেতে পারেনি, তার ফল কী হয়েছে এটা রাজনৈতিক দলগুলো দেখেছে। তারাও (রাজনৈতিক দল) কোনো সংস্কার করেনি। এর ফল কী হয়েছে সেটাও ৫ আগস্ট জাতি দেখেছে। কোনো রাজনৈতিক দল নিশ্চয়ই অজনপ্রিয় হয়ে আবার একই রকম ফলাফল দেখতে চাইবে না। এজন্য প্রথম থেকেই আমরা মতবিনিময়ে তাদের (রাজনৈতিক দল) অন্তর্ভুক্ত করেছি। একপর্যায়ে আমরা সংলাপে যাব। ওই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক মতৈক্য গড়ে সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে তারপরে আমরা নির্বাচনের কথা ভাবছি। রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছে, আগে সংস্কার ও পরে তারা নির্বাচনে যেতে চায়। আমি মনে করি আজকের দিনে বাস্তবতটাও ভিন্ন প্রেক্ষিতটাও ভিন্ন।

আরও পড়ুনঃ  অসহযোগ আন্দোলনের বাইরে থাকবে যেসব বিষয়

আরেক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছে। বিমানবন্দর এলাকা থেকে ব্যাটারিচালিত যান চলে গেছে। এ বিষয়ে অভিযান চলছে। পুলিশ ফিরেছে। একটা মনোবল ও সংযোগের যেটুকু ঘাটতি ছিল সেটাও অনেকটা চলে গেছে। আসলে আমাদেরকে তো অনেক দিকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে। আজকে এখানে শ্রমিক আন্দোলনতো কালকে ওখানে আরেক আন্দোলন।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পাচারকৃত টাকার তথ্য প্রকাশ করা হবে। লোডশেডিংয়ের অভিযোগ পাচ্ছি। মানুষের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পাওনা পরিশোধ করার বিষয়ে কাজ করছি। শ্রমিক অসন্তোষ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, শ্রমিকদের অসন্তোষ নিয়ে প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর উপদেষ্টারা বসছি। গতকালও আমরা বসেছিলাম, সেখানে ৬ জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বসে থাকা অবস্থায় একটি বড় কোম্পানি বেতন দিতে না পারার কারণে সেখানে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সেসময় আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে ৭৯ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। এতে সেই বেল্টের ৪০ হাজার শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। আজ সেজন্য শ্রমিক অসন্তোষ কম আছে।

আরও পড়ুনঃ  ইন্টারনেট শাটডাউনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : নাহিদ

তিনি বলেন, এরপরও আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের জন্য একটি পর্যালোচনা কমিটি শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি শ্রম ভবনে বসবে। আমরা শ্রমিক ভাইদের আহ্বান জানাব, যেকোনো অভিযোগ যেগুলো নিষ্পত্তিযোগ্য তারা শ্রম আইনের মধ্যে সমাধান করতে পারবেন- সেগুলো সেখানে দেওয়ার জন্য বলেছি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, কমিটিতে শ্রমিক নেতারা আছেন, মালিকপক্ষ আছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী আছেন- যারা শ্রম আইন নিয়ে কাজ করেন। তাদের কাছে অভিযোগগুলো দিলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে এগুলো সমাধান করতে পারি সেজন্য মূলত আমাদের বর্তমান যে কমিটি তার বাইরে গিয়ে একটি রিভিউ কমিটি করে দেবো। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে যে শ্রমিক অসন্তোষ আছে সেটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। শ্রমিকদের যেসব সমস্যা আছে সেগুলোর সমাধান দিতে পারব।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ