Saturday, June 28, 2025

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, সাবেক এসআইয়ের নামে মামলা

আরও পড়ুন

ব্যবসায়ীর ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক এসআই মাহবুব হাসানের (৪১) নামে মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে তিনি ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। ভুক্তভোগীর বাবা নগরের গোরহাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা সরকার (৫৫) ঘটনা পাঁচ বছর পর বাদী হয়ে বুধবার রাতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার একমাত্র আসামি মাহবুব হাসান নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আরএমপির গোয়েন্দা শাখার ডিবি থেকে কয়েক মাস আগে বরখাস্ত হন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা।

এছাড়া, ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম রাজিব আলী (৩১)। তিনি নগরের গোরহাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদ রানা সরকারের ছেলে।

আরও পড়ুনঃ  বাবাকে হত্যা করে থানায় এসে মেয়ের স্বীকারোক্তি

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তৎকালীন এসআই মাহবুব হাসান ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর দুপর দেড়টার দিকে সাদাপোশাকে নগরের গোরহাঙ্গা এলাকায় ব্যবসায়ী মাসুদ রানা সরকারের বাড়ি গিয়ে তার ছেলে রাজিব আলীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে নগরের শিমলা বাগানে নিয়ে তার মাসুদ রানাকে মোবাইল ফোনে মাহবুব হাসান জানান, এখনই ৫ লাখ টাকা না দিলে পদ্মার চরে নিয়ে তাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হবে। এ সময় ছেলের প্রাণ বাঁচাতে ভয়ে মাসুদ রানা শিমলা বাগানে গিয়ে মাহবুব হাসানের হাতে ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। এ সময় মাহবুব হাসান বলেন, আপনি (মাসুদ রানা) বাড়ি চলে যান, আমরা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবো। পরে মাসুদ রানা চলে যাওয়ার পর মাহবুব হাসান তার ছেলেকে ছাড়েন নি। বরং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেন। দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ করার পর রাজিব এ মামলায় জামিন পান।

আরও পড়ুনঃ  টহলরত পুলিশ সদস্যকে তুলে নিয়ে যায় ডাকাত দল, এরপর যা ঘটলো

ভুক্তভোগী রাজিব আলীর বাবা মাসুদ রানা সরকার জানান, বিনা অপরাধে ছেলেকে জিম্মি করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখি পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ করার পর রাজিব এ মামলায় জামিন পান। পরে মাহবুব হাসানের সঙ্গে দেখা হলে টাকা ফেরত চাইলে তিনি টাকা ফেরত দেবেন না বলে জানান।

তিনি জানান, সর্বশেষ এক মাস আগে পুলিশের বরখাস্তকৃত এই এসআইয়ের সঙ্গে নগরের রেলগেট এলাকায় দেখা হলে আবারও টাকা ফেরত চাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুব হাসান মারমুখী আচরণ করে বলেন, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। টাকা চাইলে মেরে ফেলবো। পরে বাধ্য হয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পুলিশ এগিয়ে আসলে আমরা পাহারা দেব : জামায়াত আমির

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য থানার এসআই তাজউদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ সংবাদ