Saturday, June 28, 2025

পানির নিচে নোয়াখালী

আরও পড়ুন

টানা বর্ষণ, আধুনিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা এবং খাল দখলের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী হতে যাচ্ছে জেলা শহরসহ পুরো নোয়াখালীবাসী। ইতোমধ্যে নোয়াখালী পৌরসভাসহ প্রায় সব উপজেলা পানিতে ভাসছে। গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরে জলাবদ্ধতা বন্যার আকার ধারণ করেছে। ডুবে গেছে শহরের প্রায় সবকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌর এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন দপ্তর সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতা কবলিত হয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচের কক্ষ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, প্রেসক্লাব, রেডক্রিসেন্ট, বিআরডিবি, ম্যাটস্, বিদ্যুৎ অফিস, সাবরেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড কক্ষ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, বন বিভাগের বাংলো, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অনেক অফিস।

আরও পড়ুনঃ  একদিনেই কাঁচামরিচের দাম কমেছে ৩০০ টাকা

এদিকে জেলার প্রধান সড়কের একটি অংশসহ টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেলখানা সড়ক, মাইজদী বাজার সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক এখন কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন,পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে এবং পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে। দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর একটি। দীর্ঘদিন ধরে এ শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। কালেভাদ্রে কয়েকটি ড্রেনের কাজ করা হলেও সেগুলো নিম্নমানের। হালকা বৃষ্টিতেই এসব ড্রেন দিয়ে পানি নামতে অনেক সময় লাগে।

আরও পড়ুনঃ  যে ফোনকলটি না ধরলে বেঁচে যেতেন জহির রায়হান!

এ ছাড়াও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নোয়াখালী সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ২৬ হাজারেরও বেশি পরিবার। স্থানীয় মাছচাষিরা জানান, জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলিয়ে ২৫-২৭টি মাছের প্রজেক্ট ছিল। এ বন্যায় প্রায় সব প্রজেক্ট ডুবে গেছে। সপ্তাহব্যাপী এ বন্যায় বহু পরিবারের রান্নাঘরসহ চুলা পর্যন্ত ডুবে যাওয়ার কারণে সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ও চর উরিয়ার ৭শ থেকে ১ হাজার মানুষ শুকনো খাবার খেয়েই দিন কাটাচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে খেটে খাওয়া ও দিনমজুর মানুষের কর্মসংস্থান। এ ছাড়াও বিপাকে পড়েছেন গরু, ছাগলসহ গবাদিপশু পালনকারীরা।

আরও পড়ুনঃ  ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দরপতন ভারতীয় রুপির

স্থানীয়রা জানান, এই মুহূর্তে বন্যার্ত এলাকার বাসিন্দারা খাদ্য সংকটে ভুগছে। তাদের জন্য ত্রাণ সাহায্য জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বাড়ছে ডায়রিয়াসহ নানা পানি বাহিত রোগ।

এদিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। পানি কমে গেলে প্রতিষ্ঠান চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বন্যাকবলিতদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ