Friday, May 9, 2025

হবিগঞ্জে গুলিতে শ্রমিক নিহত, আহত ৫০

আরও পড়ুন

হবিগঞ্জে গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৫০ জন। শুক্রবার (২ আগস্ট) সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার মুমিন উদ্দিন চৌধুরী।

সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও এমপি আবু জাহিরের বাসভবন, বিএনপির একাংশের কার্যালয় ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে অন্তত ১০টি গাড়ি। এ ঘটনায় পুলিশ অন্তত কয়েক শতাধিক রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত শ্রমিকের নাম মোস্তাক মিয়া (২৪)। তিনি সিলেট জেলার টুকের বাজারের বাসিন্দা। তিনি হবিগঞ্জে থাকতেন।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বাদ জুমা কোটা আন্দোলনকারীরা শহরের কোর্ট মসজিদ মার্কেট ও শহরের অপর প্রান্তে খোয়াই নদীর তীরে নূরুল হেরা জামে মসজিদের সামনে গণমিছিলের আয়োজন করে। এ সময় সাইফুর রহমান টাউন হলের সামনে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। দুপুর আড়াইটার দিকে নূরুল হেরা জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের হলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কোর্ট মসজিদের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা এসে তাদের ধাওয়া দেয়। তখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ  স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শেখ মুজিবের ভাষণ প্রচার, মাইক ভাঙচুর

পরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা আ.লীগ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়াও জেলা আ.লীগ সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাড. মো. আবু জাহিরের বাসার সামনে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তারা এমপির বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। নিমিষের মধ্যেই শহরের দখল নেয় শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে সন্ধ্যায় শহরের সিনেমহল এলাকায় বিএনপির একাংশের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে বিকেল সোয়া ৩টায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় কোটা আন্দোলনকারীরা সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে (বানিয়াচং সার্কেল) আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

আরও পড়ুনঃ  সবজি কিনতে দিশাহারা নিম্ন আয়ের মানুষ

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় মুস্তাকিমকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ আরও অনেক আহতদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান কালবেলাকে জানান, সংঘর্ষে অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ কয়েক শতাধিক রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এমপি আবু জাহিরের ব্যক্তিগত সহকারী সুদীপ দাশ জানান, এমপি আবু জাহিরের বাসভবনে হামলা হয়নি। তবে তার বাসার সামনে কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীকে ৯ টুকরো করলেন স্ত্রী

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী কালবেলাকে জানান, হঠাৎ করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় কাল শনিবার প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ