আপিল বিভাগের রায়ের পর কোটা ইস্যুটি আদালতের হাতে চলে গেছে। বিষয়টি এখন আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কিছুই করার নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে চীন সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালে আন্দোলন ও সহিংসতার ঘটনায় বিরক্ত হয়ে কোটা বাতিল করেছিলাম। একবার তারা এ ধরনের আন্দোলন করছিল। আন্দোলন তো না সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। তখন আমি বিরক্ত হয়ে বলেছিলাম, সব কোটা বাদ দিয়ে দিলাম। তখনই বলেছিলাম যে, কোটা বাদ দিলে দেখেন কী অবস্থা হয়। এখন দেখেন কী অবস্থা তৈরি হয়েছে?’
কোটা বাদ দেয়ার ফলে, ফরেন ক্যাডারে নারী মাত্র দুই জন, আর পুলিশে নারী গেছে মাত্র ৪ জন। দেশের নারীরা কোনোদিন ডিসি-এসপি হবে-এটা তো তারা ভাবতেই পারতো না। প্রশাসনেও প্রথম সচিব বানিয়েছি আমি। যিনি বলেছিলেন, নারী কোটা চাই না। তারা কী চাকরি পেয়েছেন- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব এলাকা বা জেলা তো একই রকম হয় না। ২৩ জেলায় পুলিশে কেউ জয়েন করেনি। মেডিকেল সেক্টরেও, মুক্তিযোদ্ধারা খুঁত ধরে তখন আদালতে মামলা করলেন।
রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বললেন, মেধা কার কত সেটা পরীক্ষায় দেখা যায়। সবসময় সব কোটা পূরণও হয় না। মেধা থেকেও নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,
যারা আন্দোলন করছে, তারা আইন মানে না। সংবিধান চেনে না। সরকার কীভাবে চলে, তা নিয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। পড়ালেখা করে জিপিএ পায়, কিন্তু এসব নিয়ে কোনো ধারণা রাখে না তারা। আদালত তো রায় দিয়েছেন, এখানে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। এটি আন্দোলনকারীদের বুঝতে হবে। কোটা আন্দোলন এরপরেও চালিয়ে গেলে তারা চালাবে। ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি করলে আইন তার নিজ গতিতে বিষয়টিকে দেখবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই আজ গলাবাজি করা যাচ্ছে। নয়তো পাকিস্তানিদের বুটের মার খেতে হতো বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী৷
তিনি বলেন,
সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করে এখন আন্দোলনে নামেন। এসব দিল কোন সরকার? আন্দোলনকারীরা কী কখনও সংবিধান পড়ে দেখেছে? মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস তারা পেল কোথায়? বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র মানুষের মানসিকতা। মুক্তিযোদ্ধার নাতনি কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে, এখন সে বলে কোটা চাই না। ওই মেয়েকে বলবো- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে বাড়ি গিয়ে বসে থাকুক। কোনো দরকার নাই তার পড়াশোনার।
মেধা কার কত সেটা পরীক্ষায় দেখা যায়। সবসময় সব কোটা পূরণও হয় না। মেধাতালিকা থেকেও নিয়োগ দেয়া হয়। কোটা আর মেধা তো এক জিনিস না। এটা একটা ট্যাকটিকস বলেও উল্লেখ করেন তিনি।