Tuesday, June 3, 2025

জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে জাপার নেতৃত্ব চান রওশন, ইসিতে চিঠি

আরও পড়ুন

জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতৃত্ব চান এরশাদপত্নী রওশন এরশাদ। দলটির রওশনপন্থী অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশিদ আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এ সংক্রান্ত লিখিত আবেদন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবের কাছে জমা দিয়েছেন।

আবেদনে বলা হয়েছে— জাতীয় পার্টির (নিবন্ধন সংখ্যা-১২) দশম জাতীয় কাউন্সিলে সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত মহাসচিব হিসেবে আমি কাজী মো. মামুনুর রশিদ আপনাকে এই মর্মে অবহিত করতে চাই যে, বিগত সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এখন আমরা দেশবাসীর আগামী দিনের গণতন্ত্র সুসংহত করার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছি।

কাজী মো. মামুনুর রশিদ আবেদনে বলেন, আপনাকে অবহিত করতে চাই যে- ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনের ফাঁদে পা দেওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্য নিয়ে তৎকালীন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গংরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তখন শেখ হাসিনা তার স্বাক্ষরে জাতীয় পার্টির ২৬ জনকে মনোনয়ন প্রদান করেন। এই সব প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি যখন বিলুপ্তপ্রায়, তখন পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পার্টির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বেগম রওশন এরশাদ- জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা আহ্বান করেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘হান্নান মাসউদের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির লজ্জিত হওয়া উচিত’

কাজী মামুনুর আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পার্টির বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতভাবে সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে সাংগঠনিক নিয়মে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই বর্ধিত সভায় ৯ই মার্চ-২০২৪ তারিখে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আবেদনে বলা হয়, আমাদের সংগঠনের যাবতীয় বিধিবিধান মেনে, যথা সময়েই রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জাতীয় পার্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ গণতান্ত্রিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক দেশি-বিদেশি সাংবাদিক এবং বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে এই সম্মেলনে বেগম রওশন এরশাদ চেয়ারম্যান, কাজী ফিরোজ রশিদ কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান এবং আমি কাজী মো. মামুনুর রশিদ মহাসচিব নির্বাচিত হই। এ ছাড়া পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডিয়াম সদস্যবৃন্দ নির্বাচিত হন।

আরও পড়ুনঃ  আ.লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ আটক

কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা যথাসময়েই প্রত্যেকবার আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের তথ্য-উপাত্ত নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। জাতীয় কাউন্সিল সমাপ্ত করে আমাদের পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়ে- নির্বাচন কমিশনের রেকর্ডে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বেগম রওশন এরশাদ এবং মহাসচিব হিসেবে কাজী মো. মামুনুর রশিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই- বিগত সরকারের একান্ত আজ্ঞাবহ জাতীয় পার্টির একটি অংশকে তাদের গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে সংসদে রাখার জন্য, আমাদের বৈধ কাউন্সিলে নির্বাচিত কমিটিকে নির্বাচন কমিশন অনুমোদন না দিয়ে তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আমাদের আবেদন নামঞ্জুর করে দেন।

আরও পড়ুনঃ  আ. লীগের বিষয়ে যে প্রস্তাবনা দিলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ!

এ জন্য নির্বাচন কমিশনের রেকর্ডে জাতীয় পার্টির অনুকূলে চেয়ারম্যান হিসেবে বেগম রওশন এরশাদ এবং মহাসচিব হিসেবে কাজী মো. মামুনুর রশিদের নাম অন্তর্ভুক্তকরণ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব আলী কেএম আলী নেওয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের আবেদন বর্তমানে কতটুকু যৌক্তিক, তা ইসির আইনি ক্ষমতা অনুযায়ী পরীক্ষা করে আমরা দেখব। তারপর আইনগত সিদ্ধান্ত জানাব।

সর্বশেষ সংবাদ