Saturday, June 28, 2025

টাঙ্গাইলে মানসিক প্রতিবন্ধীকে লাথি মারলেন ইউপি চেয়ারম্যান, ভিডিও ভাইরাল

আরও পড়ুন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মোতালেব হোসেন (৪৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তার লাথি মারার কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে চেয়ারম্যান ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মোতালেব হোসেন নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে তাকে লাথি মেরেছেন। মোতালেব মানসিক প্রতিবন্ধী, যা আগে জানতেন না চেয়ারম্যান।

ভুক্তভোগী মোতালেবের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৩ মার্চ) বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম চলছিল। বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চতলবাইদ দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন ছোট একটি লাঠি হাতে পরিষদ চত্বরে যান। তিনি মোশারফ নামের এক ব্যক্তিকে পেটাবেন বলে বকাঝকা ও খোঁজ করছিলেন।

এ সময় দায়িত্বরত দফাদার মোতালেবকে নিবৃত্ত করে তাড়িয়ে দেন। পরে বেলা দুইটার দিকে তিনি একইভাবে পরিষদ চত্বরে গিয়ে বকাঝকা করতে থাকেন। চেয়ারম্যান নূরে আলম মুক্তা এগিয়ে এসে মোতালেবকে পরিষদ চত্বর ত্যাগ করতে বললে তিনি চেয়ারম্যানকে আঘাত করে বসেন। এ সময় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে মোতালেবকে লাথি মারেন।

আরও পড়ুনঃ  যে পরিচয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার আরসার সদস্যরা

এ ঘটনার একদিন পর সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুর থেকে ‘চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তা অসহায় এক অটোরিকশাচালককে লাথি মারছেন’ এমন ক্যাপশন দিয়ে চার সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা জানতে প্রত্যক্ষদর্শী দফাদার প্রহর লাল, ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা বলেন, ওই লোককে পরিষদ চত্বর ত্যাগ করতে বললে তিনি হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে চেয়ারম্যানকে লাথি দেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানও ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি মেরেছেন। পরে জানা যায়, লোকটি মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি নিজ এলাকায়ও অনেকের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  গেলেন টিউশনি করতে, ফিরলেন লাশ হয়ে

বহুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া জানান, মোতালেব মানসিক রোগী। প্রায়ই এলাকার মানুষদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ভিডিওটির অংশবিশেষ প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (মোতালেবের এলাকা) ইউপি সদস্য বদর উদ্দিন বলেন, মোতালেব হোসেন মানসিক ভারসাম্যহীন।

মোবাইল ফোনে মোতালেবের ভাতিজা ফারুক হোসেন ও ভাতিজি সাজেদা আক্তার বলেন, চাচা মোতালেব হোসেন প্রায় ছয় বছর আগে বিদেশ থেকে ফেরার পর থেকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। এটা সবাই জানে, চেয়ারম্যান যদি চাচাকে আঘাত না করে আটকে রেখে খবর দিতেন, তাহলে ভালো হতো। আর যারা আমাদের কাছে না জেনেই ভিডিওটি ছড়িয়ে দিচ্ছে, তারাও ঠিক করছে না।

আরও পড়ুনঃ  বানভাসীদের থেকে ঋণের টাকা আদায়ে এনজিও কর্মীদের চাপ

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম মুক্তা বলেন, লোকটি যে মানসিক ভারসাম্যহীন, তা আমি জানতাম না। জানলে আমি কোনোভাবেই এই আচরণ করতাম না। এখন আমাকে ছোট করতে কোনো একটি পক্ষ ভিডিওটি কেটে-ছেঁটে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ২ মার্চ পারিবারিক কলহের জেরে সরকার নূরে আলম মুক্তা তার প্রতিবেশী জেসমিন আক্তারকে (৩৫) মারধর করেছিলেন। অপর প্রতিবেশী রুবেলকে (৩৭) সঙ্গে নিয়ে চেয়ারম্যানের ওই মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যান মুক্তা কয়েক দিন টাঙ্গাইল কারাগারে ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ