বগুড়ায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান এ সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা কাউকে জানিয়ে যায়নি। নিজেদের ইচ্ছায় গিয়েছে এবং সেখানে আটক হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিকেলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন তদন্ত হবে, এরপর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বরখাস্ত হওয়া পাঁচ পুলিশ সদস্য হলেন—আরএমপির গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম ও বাশির আলী। এছাড়া, তাদের সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাসচালক মেহেদী হাসানকেও আটক করা হয়েছে।
বরখাস্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য রোববার ধুনট উপজেলায় গিয়ে জুয়া খেলার অভিযোগে দীঘরকান্দি গ্রামের রাব্বী ও জাহাঙ্গীর নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেন। এরপর শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় গাড়ি থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দর-কষাকষির পর নগদ ২ লাখ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে বগুড়া জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় পালানোর সময় গাড়িটি আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ডিবির পোশাক ও পুলিশের ১টি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘আরএমপির গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্য কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ধুনট উপজেলায় এসে জুয়া খেলার অভিযোগে চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘরকান্দি গ্রামের রাব্বী ও জাহাঙ্গীর নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করে মাইক্রোবাসে তোলেন। পরে শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে গাড়ি থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে নগদ ২ লাখ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।’
সুমন রঞ্জন সরকার আরও বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ধুনট উপজেলার বাসিন্দা কনস্টেবল ওয়াহাব আরএমপির গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত। তিনি ছুটি নিয়ে দুই দিন আগে বাড়িতে আসেন। তার তথ্যমতেই, রাজশাহী থেকে পাঁচজন ধুনটে আসেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। হাইওয়ে পুলিশ তাদের ধুনট থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের নামে ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে অপহরণ মামলার পর বিকেলে বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হয়।’