বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, কথিত মানবসেবক গ্রেপ্তার
নেত্রকোনার কথিত কবিরাজ, বৃক্ষপ্রেমিক ও মানবসেবক আব্দুল হামিদকে (৬৭) গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ। এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার ভোরে জেলা সদরের নেওয়াজনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কবিরাজ আব্দুল হামিদের আসল বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার রামপুর গ্রামে। তিনি নেওয়াজনগর এলাকার একটি বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকেন।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ষাটোর্ধ আব্দুল হামিদ সবসময় নিজেকে একজন অভিজ্ঞ কবিরাজ, বৃক্ষপ্রেমিক ও মানবসেবক হিসেবে পরিচয় দেন, যদিও কবিরাজি প্রশিক্ষণের তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সনদ নেই। জেলা সদরের হাসপাতাল রোডে একটি কবিরাজি ওষুধের দোকান পরিচালনার পাশাপাশি তিনি অনলাইন মাধ্যমেও চ্যালেঞ্জ (!) ছুঁড়ে দিয়ে যৌন রোগের ওষুধ বিক্রি করেন। তাছাড়া পথেঘাটের অসুস্থ ভবঘুরেদের চিকিৎসা এবং পরিচর্যা করার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করে ভিউয়ারদের বাহবা কুড়ান। বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে সশরীরে হাজির হয়েও তাকে মানবসেবক, স্বেচ্ছাসেবক এবং বৃক্ষপ্রেমিক পরিচয় দিয়ে জনগণের, এমনকি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহানুভূতি আদায় করতে দেখা যায়। এসব পরিচয়ে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের বহু পুরস্কার, সম্মাননা এমনকি আর্থিক সহায়তাও আদায় করেছেন তিনি। জেলা সদরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই তাকে ওই পরিচয়ে চেনেন এবং জানেন।
পুলিশ জানায়, মানবসেবক নামের ভণ্ড আব্দুল হামিদ গত ১০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে খতিবনগুয়া এলাকার এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৬) চিকিৎসার কথা বলে হাসপাতাল রোডের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে কিশোরীটি বাড়ি ফিরে তার মাকে ওই ঘটনাটি জানায়। এরপর কিশোরীর মা জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হন যে, আব্দুল হামিদ এর আগেও কয়েকবার তাকে চিকিৎসার কথা বলে ধর্ষণ করেছেন। এ অবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে রবিবার রাতে নেত্রকোনা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ভোর রাতে মডেল থানা পুলিশ আব্দুল হামিদকে নেওয়াজনগর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি কাজী শাহনেওয়াজ জানান, আব্দুল হামিদকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।