Saturday, June 28, 2025

‘রোজার মাসে জামিন চেয়ে পাচ্ছি না, এর চেয়ে খারাপ আর কি থাকে’

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট ফারজানা রূপাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (০৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম এ আদেশ দিয়েছেন।

সকালে সাংবাদিক দম্পতিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন। শুনানির এক পর্যায়ে ফারজানা রূপা আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চান।

তার পক্ষে আদালতে কথা বলার জন্য ‘কোনো আইনজীবী নেই’ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি কী আমার জামিনের পক্ষে কথা বলতে পারব? এ সময় বিচারক বলেন, এখানে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হচ্ছে, জামিনের শুনানি হচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ  আজ শুক্রবার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় মাসব্যাপী লিফলেট বিতরণ উদ্ভোবনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আবদুস সালাম। ছবি : এনটিভি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে শুধু দলের নয়, পুরো দেশের দায়িত্ব নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় মাসব্যাপী লিফলেট বিতরণ উদ্ভোবনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুস সালাম এসব কথা বলেন। আবদুস সালাম বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর মানুষ গণতন্ত্রের স্বাদ পায়নি। দেশের মানুষ নির্যাতিত-নিপীড়িত ছিল। আওয়ামী দুঃশাসনের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সব কিছু ধ্বংস করেছে। তাই আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে, আবার সবকিছু ধ্বংস করবে। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। আজকে যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে চায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে আবদুস সালাম বলেন, আজকে দেশ সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আর আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে ৩১ দফার মধ্যমে দেশের সব কিছু সংস্কারের কথা অনেক আগেই বলে দিয়েছি। আপনারা দেশের সংস্কারের কথা বলছেন? বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কারের উদাহরণ হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান যে সংস্কার করেছেন, বাংলাদেশে ওই সংস্কার আর কেউ করতে পারবে না। আবদুস সালাম আরও বলেন, আজকে শেখ হাসিনা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো অবস্থান করছে। তাই আপনাদেরকে যার যার এলাকায় সুসংগঠিত হতে হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে আপনাদের বলতে চাই, বিএনপি সব সময় আপনাদের সাথে আছে। আবদুস সালাম বলেন, ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে, মোহাম্মদপুরে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। সেই বীরদের আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমরা গত ১৭ বছরে অনেক নেতা-কর্মী হারিয়েছি। অনেকে আহত হয়েছে। আমাদের যুবদলের নেতা রফিককে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছিল। সে সব ঘটনা আমরা ভুলে যাই নাই। তাই আমরা আওয়ামী দোসরদের বলতে চাই, আর মাঠে নামার চেষ্টা করিয়েন না। এবার আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ইনশাআল্লাহ্, জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। যারা সীমান্তের ওপারে বসে ষড়যন্ত্র করছেন, তারা কী সীমান্তের এপারে আসতে পারবে? এবার আর ভারতে বসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানানো যাবে না, হওয়াও যাবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ইকবাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম-আহ্বায়ক হাজী ইউসুফ, মহিলা দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রুনা লায়লা, জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জামাল হোসেনসহ মোহাম্মদপুর, আদাবর এবং শেরেবাংলা নগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এরপর ফারজানা রূপা বলেন, মামলা তো ডজন খানেক গড়াচ্ছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটা হত্যা মামলাই যথেষ্ট। পরে বিচারক তাকে যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদেশ দেন। এসময় আসামির কাঁঠগড়ায় থাকাবস্থায় শাকিল ও রূপা একে অপরের সাথে দীর্ঘসময় কথা বলেছেন।

যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই মামলার মধ্যে একটিতে শাকিল, রূপাসহ ঢাকার উত্তরের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপর মামলায় শাকিল ও রূপাসহ সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘একই দিনে জাতীয় ও ইউপি নির্বাচন করা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে’

শুনানি শেষে পুলিশি নিরাপত্তায় আদালতে থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে রূপা বলেন, একজন সাংবাদিককে আটকানোর জন্য একটা মামলাই যথেষ্ট। এতোগুলা মামলা দেওয়ার কি আছে? রোজার মাসে জামিন চেয়ে পাচ্ছি না। এর চেয়ে খারাপ কথা আর কি থাকে। এরপর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রবল গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর গত ১০ অগাস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে একটি চিঠি পাঠায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ৫০ জন সাংবাদিকের একটি তালিকা দিয়ে বলা হয়, এসব সাংবাদিক প্রতিনিয়ত পুলিশ ও আওয়ামী লীগকে মদদ এবং উসকানি দিয়েছেন। এভাবে তারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধে জড়িত ছিলেন। ওই তালিকায় শাকিল ও রূপার নামও ছিল।

আরও পড়ুনঃ  মুক্তিযোদ্ধার অন্তিম সম্মান পেলেন না মতিয়া চৌধুরী

ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশ ছাড়ার চেষ্টার সময় ২১ অগাস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর কয়েকটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সর্বশেষ সংবাদ