বাবা ছিলেন বিএনপির মহাসচিব। প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও। নিজে ছিলেন দলটির সংসদ সদস্য। কিন্তু রাজনৈতিক মতবিরোধের জেরে বিএনপি ছেড়ে গড়েছেন নতুন দল। তবে জিয়া পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ পুরানো। যে কারণেই হয়তো দীর্ঘদিন পর জিয়া পরিবারের সদস্যদের পুনর্মিলনের আগ মুহূর্তে এসে বিকল্প ধারার মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী বললেন আবেগঘন কিছু কথা।
একইসঙ্গে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতাও কামনা করেছেন বিকল্প ধারার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক একিএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বি চৌধুরী।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে মাহী বি চৌধুরী বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য অচিরেই লন্ডন যাচ্ছেন। অতীতের সকল রাজনৈতিক পার্থক্য ও ভুল বোঝাবুঝি সত্ত্বেও, এই পুনর্মিলনের আনন্দে আমার হৃদয় এক অনির্বচনীয় শান্তি ও তৃপ্তিতে ভরে উঠেছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে খালেদা জিয়া লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন তিনি। তাকে লন্ডন পৌঁছে দিতে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছেন কাতারের আমির। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কাতার আমিরের বিশেষ বিমান রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে।
খালেদা জিয়া লন্ডন পৌঁছে সরাসরি হাসপাতালে যাবেন। সেখানে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়াকে বরণ করবেন। যার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর মা-ছেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে।
তাদের পরিবারিক এই পুনর্মিলনের প্রসঙ্গ টেনে মাহী বি চৌধুরী লিখেছেন, কিছু সময়ের মধ্যেই একটি মায়ের সঙ্গে তার সন্তানের পুনর্মিলন, একজন দয়ালু দাদীর সঙ্গে তার আদরের নাতনি ও পুত্রবধূর পুনর্মিলন ঘটতে যাচ্ছে। আমি কল্পনা করে আনন্দিত হই, তাদের প্রথম পারিবারিক নৈশভোজ, যেখানে হাসি-আনন্দ, গল্প আর স্মৃতিচারণায় মুখরিত হবে তাদের পরিবেশ।
নিজের বাবার মৃত্যুর কথা স্মরণ করে মাহী বলেন, গত বছরের ৫ অক্টোবর, আমার বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার কষ্ট আর অসুস্থতার মুহূর্তগুলোতে আমরা দেখেছি, আমার আর বোনদের উপস্থিতি তার মুখে হাসি এনে দিয়েছে। আমার মা এবং তার নাতি-নাতনিদের সান্নিধ্যে তিনি বার্ধক্য জয় করে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতেন—কখনও তার প্রিয় গান গেয়ে, কখনও প্রিয় কবিতা আবৃত্তি করে। তার জীবনের বড় বড় অর্জনের চেয়ে এসব সাধারণ মুহূর্তগুলোই তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ করে তুলত।