পাঠ্যবইয়ে জুলাই বিপ্লবের বিজয়গাথা, কমেছে ভুল
নতুন বছরের বই মানেই ‘পাতায় পাতায় ভুল’। ভুলে ভরা সেই পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হতো শিক্ষার্থীদের হাতে। সেই খবর ফলাও করে প্রকাশিত হতো খবরের কাগজগুলোতে। এমন চিত্র প্রতি বছর দেখা গেলেও এবারের চিত্র একটু ভিন্ন। ২০২৫ সালে পাঠ্যবইয়ে সেই ভুলের সংখ্যা কমেছে। নতুন বছরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে গল্প-কবিতা, সংকলন এবং ছবি ও গ্রাফিতির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নানা বিষয়বস্তু।
বাদ দেওয়া হয়েছে শেখ মুজিববন্দনা ও পরিবারকেন্দ্রিক ইতিহাস। নতুন করে জায়গা পেয়েছেন স্বাধীনতা ঘোষক মেজর জিয়াউর রহমানসহ অন্যরা। স্থান পেয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন তথা জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস। বইয়ের মলাটে স্থান পেয়েছে জুলাই বিপ্লবের নানা কাহিনি, ছবি ও কার্টুনসহ নানা বিষয়। নতুন বছরের বইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ইতিহাস শেখাতে শিশু-কিশোরদের জন্য তুলে ধরা হয়েছে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান কান্ডারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা । ফাইল ছবি
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানান, নতুন বছরের পাঠ্যবই মানেই পাতায় পাতায় ভুল, ফেসবুক থেকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত চলত বিতর্ক। গত কয়েক বছর ধরে চলা এমন বিতর্ক চলতি বছরে অনেকটা কমানো গেছে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বইয়ের ১৪৭টি ভুল চিহ্নিত করা হয়েছিল। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ২২টি বইয়ে ৪২১টি ভুল পায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। চলতি বছর এখন পর্যন্ত (৪ জানুয়ারি পর্যন্ত) জুলাই মাসে একজন শহীদের নাম ভুল গেছে বলে তথ্য এসেছে। যদিও সেই ভুল অনলাইনে সংশোধন করা হয়েছে।
বাদ দেওয়া হয়েছে শেখ মুজিববন্দনা ও পরিবারকেন্দ্রিক ইতিহাস। নতুন করে জায়গা পেয়েছেন স্বাধীনতার ঘোষক মেজর জিয়াউর রহমানসহ অন্যরা। স্থান পেয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন তথা জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস। বইয়ের মলাটে স্থান পেয়েছে জুলাই বিপ্লবের নানা কাহিনি, ছবি ও গ্রাফিতিসহ নানা বিষয়। নতুন বছরের বইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে
নতুন আঙ্গিকে ও নতুন কারিকুলামে বই লেখার কারণে গত তিন বছরে ভুলের পরিমাণ বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির সম্পাদনা শাখার কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, ২০১২ সালের পুরোনো কারিকুলামে ফিরে যাওয়ায় চলতি বছর ভুল কম হয়েছে। কারণ, এবারের বইগুলো ২০১২ সালের পর কয়েক ধাপে পরিমার্জিত ছিল। তারপরও ২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে মূল পাঠ্যবইগুলোর মধ্যে ৬৯১টি বই নতুন করে পরিমার্জন করা হয়েছে। সেখানে বড় ধরনের ভুল ধরা পড়েনি। অধিক সতর্কতার কারণে ভুল কমানো গেছে বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।