Monday, August 18, 2025

আল্লাহর আইন শুধু মুসলমান নয় সবার জন্য: জামায়াতের আমির

আরও পড়ুন

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে দলীয় কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আল্লাহর আইন সমস্ত মানুষের জন্য। শুধু মুসলমানদের জন্য নয়। আমরা সেই আইনের জন্য লড়াই করছি। এখন কেউ আমাদেরকে যা বলতে চাই বলুক। এ জায়গায় কোনো আপস নেই।

শফিকুর রহমান বলেন, দেশবাসীর স্বার্থ সংরক্ষণের লড়াইয়ে আমাদেরকে আপনারা দেখবেন। আমরা আপনাদের ভালোবাসার কাঙাল। আমরা আপনাদের দোয়া চাই, সাহায্য ও সমর্থন চাই। এ লড়াইয়ে আপনাদেরকে পাশে চাই। এ লড়াইয়ে আপনাদের বুকের বিছানায় একটু জায়গা চাই। সাংবাদিক বন্ধুদের এ লড়াইয়ে অংশীদার হিসেবে দেখতে চাই।

আজ শনিবার সকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এমন একটা দেশ কি আপনারা চান যে সমাজে চাঁদাবাজি থাকবে না, যে সমাজে ঘুষখোর থাকবে না, যে সমাজে দখল বাণিজ্য চলবে না, মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য হবে না, যে সমাজে ধর্মে ধর্মে কোনো বৈষম্য হবে না। তাঁর জন্য লড়াই করতে হবে। আরও অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর জেলা ছাত্রদল সভাপতিকে অব্যাহতি

যারা ধর্মের বিভাজন তৈরি করে তারাই ৫৩ বছর আপনাদেরকে বড় কষ্ট দিয়েছে বলে দাবি করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের দলের কেউ এই অপকর্মে (ধর্মীয় বিভাজন) জড়িত নয়। অথচ দোষ দেয় আমাদের ঘাড়ে। কোনো কিছু হলে যত দোষ, নন্দ ঘোষ। সব করেছে জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু একটাও প্রমাণ করতে পারে নাই।’

জামায়াতের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আল্লাহর আইন সমস্ত মানুষের জন্য। শুধু মুসলমানদের জন্য নয়। আমরা সেই আইনের জন্য লড়াই করছি। এখন কেউ আমাদেরকে যা বলতে চাই বলুক। এ জায়গায় কোনো আপস নেই। তিনি আরও বলেন, আমাদের ছাত্র সমাজকে কথা দিচ্ছি। এমন শিক্ষা তোমাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে যাতে একটা বেহুদা কাগজের টুকরা সার্টিফিকেট নিয়ে এই দুয়ারে ওই দুয়ারে আর দৌড়াদৌড়ি করা লাগবে না। তোমাদের শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কাগজের টুকরা আর তোমাদের ন্যায্য পাওনা বা কাজ তোমাদের হাতে উঠে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  আবারও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে লাশ উদ্ধার

শফিকুর রহমান বলেছেন, ওরা (জামায়াত বিরোধীরা) নারী-পুরুষের ব্যবধান এনে আমাদেরকে বলে জামায়েতে ইসলামি ক্ষমতায় গেলে এ দেশের নারীরা বিপদে পড়বে। আমি বলি কেন বিপদে পড়বে? নারীরা তো মায়ের জাতি। এর প্রমাণ আমাদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা লেখাপড়া করে, তাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করে, তাঁরা সামাজিক দায়িত্ব পালন করে, তাঁরা রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করে। আমাদের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ সব মিথ্যা।

জামায়াতের আমির আরও বলেন, কেউ কেউ বলে কর্মক্ষেত্রে সবাইকে কালো বোরকা পরিয়ে দেবে। বোরকা কালো হবে না, লাল হবে। সাদা হবে না, বেগুনি হবে। সে দায়িত্ব আমার না। বোরকা কাউকে জোর করে পরানো হবে না। যে মা মনের সন্তুষ্টির সঙ্গে বোরকা পরতে চাইবেন, পর্দা করতে চাইবেন, তিনি করবেন।

আরও পড়ুনঃ  চিন্ময়ের গ্রেফতারের বিষয়ে যা বললেন প্রেস সচিব

শফিকুর রহমান বলেন, আমি অন্য ধর্মাবলম্বী মাকে কীভাবে বোরকা পড়াব? ইসলাম কি আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? তাঁরা (ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মের নারীরা) যা পছন্দ করেন সেভাবেই চলবেন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো হবে যাতে মানুষ বাধ্য হয় নারীদেরকে নিজের মায়ের দৃষ্টিতে দেখতে। তখন নারীরা ওই রকম পোশাক পরে গর্ব করবেন যে এই পোশাক আমার ইজ্জতের প্রতীক, আমার সম্মানের প্রতীক।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল সুজা উদ্দিন জোয়াদ্দরের সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ