Saturday, June 28, 2025

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করলে সমস্যা নেই’

আরও পড়ুন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পটি একনেক সভায় পাস হয়েছে এবং এই প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনী দ্বারা বাস্তবায়িত হলে কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তিনি এ কথা জানান। এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে একনেক সভায় প্রকল্পটি পাস করিয়ে নিয়েছি। কেরানীগঞ্জে সম্পূর্ণ একটা নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে। বাংলাদেশে এভাবে এত বড় ক্যাম্পাস আগে কখনও তৈরি করা হয়নি। পাকিস্তান আমলের শেষে শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা ক্যাম্পাস হয়েছিল। এত বড় একটা মেগা প্রকল্প আমরা নেবো কিনা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু একনেকের গত মিটিংয়ে (অনুমোদন হয়েছে), যেটা ছাত্র এবং শিক্ষকরাও জানেন না। কারণ এখন পর্যন্ত সেটার মিনিটসটাও (সভার নথি) জারি হয়নি।’

আরও পড়ুনঃ  লাশ পোড়ানো সেই পুলিশ কর্মকর্তা কাফী আটক

তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস- যেখানে ছাত্রাবাস থাকবে, প্রশাসনিক ভবন থাকবে, স্কুল থাকবে, চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে- এরকম একটা প্লান করার অনুমতি একনেক থেকে পাস করে দেওয়া হয়েছে।’

প্রকল্প নিয়ে তিনি জানান, তাদের যে চলমান প্রকল্প আছে সেখানে কিছু জমি অধিগ্রহণ করা এবং জমিগুলো ঠিকঠাক করে কিছু প্রাথমিক কাজ করা হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফেইজ।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘এত বছর ধরে প্রকল্পটা কেন হচ্ছে না, ভূমি অধিগ্রহণ কেন হয়নি, তারা বলছে যে প্রকল্প পরিচালকের অনেক দুর্নীতি হয়েছে। আমি বলেছি তদন্ত করে দেখুক; কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে সেই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হোক। বুয়েটের মাধ্যমে তারা প্রথম প্রকল্পের পরিচালনা করছে। এটা এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তারা চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতেও কোনও সমস্যা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো স্বায়ত্তশাসিত অনেকাংশে, তারা যদি সেটা চায় তাহলে ইউজিসির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের এতে কোনও আপত্তি নেই। বরং আমরা সহায়তা করবো, কী করে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যায়।’

আরও পড়ুনঃ  সিনওয়ারের ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসকের চমকপ্রদ তথ্য

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যে বিশাল জায়গাটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে সেটা আমি দেখিনি। কিন্তু এটা একটা বিরাট জায়গা এবং একটা মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এটাকে এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটা মেগা প্রজেক্ট হিসেবে মনে করা যেতে পারে। এর শুরুটা হবে এখন।’

শিক্ষর্থীদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিষয়টা তারা নিজেরাও বলেছে ভুল বোঝাবুঝির জন্য হয়েছে। তাদের আন্দোলনের আগেই অনেক কিছু করিয়ে দিয়েছি। তাদের ছোটখাটো কিছু দাবি আছে, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমাধান করা যেতে পারে।’

ছাত্ররা আন্দোলন থেকে ফিরে যাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা প্রচণ্ড সম্মান দেখিয়েছে আমাকে। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে শুধু ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছি। মনে করেছি যে আমি তাদের সমস্যার সব সমাধান দিতে পেরেছি।’

আরও পড়ুনঃ  ওসির কথায় উজ্জীবিত হয়ে থানায় পিস্তল নিয়ে এলো চার শিশু

শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি

(১) স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে।

(২) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

(৩) পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে।

(৪) সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

(৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ