Friday, January 10, 2025

বিদায় বেলায় ‘রাজকীয়’ সংবর্ধনা পেলেন শিক্ষক, কাঁদলেন ও কাঁদালেন

আরও পড়ুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাহেরচর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালেয়র সহকারী শিক্ষক আবু তালেব। দীর্ঘ জীবন ছিলেন শিক্ষকতার সঙ্গে। প্রীতি আর ভালোবাসায় সবার সঙ্গে গড়ে ওঠে তার নিবিড় এক সম্পর্ক। আর তাইতো বিদায়ের দিনে হাজির হন প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা পেশার মানুষ।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে এই গুণী শিক্ষকের বিদায়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।

বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঞ্চ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা স্মারক।

এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন সহকর্মীসহ শিক্ষার্থীরা। চোখে জল নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে অবসরে যান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  সংলাপ, সংস্কার ও বিচারে মনোযোগ সরকারের

জিয়াউর রহমান নামের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, আবু তালেব স্যার অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। ওনার কাছ থেকেই জীবনের ব্রতগুলো শেখা। সব সময় সন্তানের মতো স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের।

তানজিনা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, স্যারকে আর ক্লাসে পাব না ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। সব কিছু খুব মিস করব। এমন শিক্ষকই আমাদের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বিদায়ী শিক্ষকের কর্মজীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাঁদেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোতালিব। তিনি বলেন, ‘কখনও আমাদের সঙ্গে স্যারসুলভ আচরণ করেননি। তিনি ছিলেন সকলের ভাই। যখন তাকে ডেকেছি, তখনই তাকে কাছে পেয়েছি। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হাহাকার করবে ওনাকে ছাড়া।’

আরও পড়ুনঃ  সেই ছাত্রদল নেতার সব পদ কেড়ে নেওয়া হলো

স্থানীয় বাসিন্দা রাজু আহমেদ বলেন, এমনই শিক্ষকই আমাদের এই সমাজে প্রয়োজন। বিদায় বেলায় কত মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি। কর্মের ওপরই মানুষের ভালোবাসা নির্ভর করে। আমাদের মনে সব সময় ওনি থাকবেন।

দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে এমন সম্মান পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন বিদায়ী শিক্ষক আবু তালেব।

তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকতা করেছি। এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করানো, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে। ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সবাই আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, তাতে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। এই ভালোবাসাকে পুঁজি করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারব।

আরও পড়ুনঃ  গুলি করে হত্যা: পরিবার বলছে ছাত্রদল করতো, পুলিশের দাবি মাদক ব্যবসায়ী

আবু তালেব বলেন, আমি চাই আমার ছাত্ররা যেন ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করতে পারে। সমাজের জন্য, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে তারা যেন সর্বদা সজাগ থাকে। এতেই আমি শান্তি পাব।

সর্বশেষ সংবাদ