বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেছেন, বিএনপি স্বৈরাচারের মতো আচরণ করতে চায় না। গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যে ভুল করেছে, একই ভুল বিএনপি করবে না।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তার পক্ষে বগুড়ার শিবগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া এবং আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিনুল হক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখতে চাই না। আমরা চাই না, আর কোনো বাবা এভাবে তার সন্তানকে হারাক। আমরা চাই না, আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক। আমরা চাই- বাংলাদেশে এখন থেকে কোনো চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, দখলদারি আর চলবে না। কারণ আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন, দুষ্কৃতকারী যদি আমার দলের লোকও হয় বা এ ধরনের কোনো কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ বিএনপি স্বৈরাচারের মতো আচরণ করতে চায় না। গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যে ভুল করেছে সে ভুল বিএনপি করবে না।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়ার শিবগঞ্জে নিহত সেলিম মাস্টার ও শ্রমিক দল নেতা রনির পরিবার এবং আহতদের সঙ্গে দেখা করে তাদের পরিবারের খোঁজখবর ও আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়।
আমিনুল হক বলেন, আমরা চাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, তাদের প্রত্যাশাকে নিয়ে এবং জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামীতে সমৃদ্ধশালী শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে। সেই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আপনার-আমার সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে যাতে আর কোনো স্বৈরাচারের জন্ম না হয়। বাংলাদেশে যাতে একটা সুস্থ ধারার রাজনীতির পরিবেশ তৈরি হয়, এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার আপনাদের সামনে উপস্থিত হচ্ছেন। তিনি বলছেন, বাংলাদেশের জনগণের যে প্রত্যাশিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশের মাটিতে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা এবং সে সরকার জনগণের কথা মতো চলবে। থাকবে জনগণের কাছে তার জবাবদিহিতা।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো- আপনারা আপনাদের স্বাধীন মতামত, সত্য কথা বলতে পারছেন, যেটা আপনারা গত ১৭ বছরে বলতে পারেননি। সত্য কথা বললেই সাংবাদিক ভাইদের বিরুদ্ধে, আমাদের-আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলায় জর্জরিত করেছিল- এই আওয়ামী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার।
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার গত ১৭ বছরে আমাদের বহু ভাইদের গুম, খুন ও হত্যা করেছে। ছাত্র এবং জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের প্রেত্মারা ছাত্র-জনতা এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা সবাই স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার আজ্ঞাবহ দোসরদের বিচার দাবি করি। শেখ হাসিনার বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন, শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলমসহ স্থানীয় নেতারা।