গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাব্বির হোসেন নামের এক তরুণকে কুপিয়ে ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক নয়টার দিকে উপজেলার সফিপুর পশ্চিমপাড়া এলাকায় ইউনিক টাওয়ারের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাব্বির (২০) কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আহমদ নগর চৌরাস্তা এলাকার মৃত লিটন মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাব্বিরের বড় ভাই আবির হোসেন বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে সাব্বিবের দুই বন্ধুর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দুই আসামি মো. রাকিম (২১) ও মো. সাকিব (২১) যমজ ভাই। তারা উপজেলার সফিপুর এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। ঘটনার পর থেকে ওই দুজন পলাতক। তাদের ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্র ও এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে রাকিব, সাকিব ও সাব্বির একসঙ্গে একটি জিমে যান। সেখান থেকে তারা রাকিব ও সাকিবের বাসা ইউনিক টাওয়ারের ছাদে যায়। সঙ্গে ছিল করণ ও সোহান নামের দুই কিশোর। পরে দুই কিশোরকে মুড়ি কিনতে দোকানে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর ওই দুই কিশোর ফিরে আসে এবং ভবনের নিচে রক্তমাখা অবস্থায় সাব্বিরকে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তারা ছাদে গিয়ে সাব্বিরের কাটা নখ ও রক্তমাখা অস্ত্র পড়ে থাকতে দেখে। কিন্তু রাকিব ও সাকিব সেখানে ছিলেন না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল ফোন, ধারালো অস্ত্র, মুড়িভর্তি একটি পট এবং বাটি উদ্ধার করা হয়।
এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে সাব্বিরকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ওই ভবনের ছাদ থেকে একটি কাটা আঙুল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা ও দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্থানীয়রা দাবি জানাচ্ছেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এএফএম নাসিম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মো. জুবায়ের বলেন, নিহত সাব্বিরের ভাই থানায় মামলা করেছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।