Saturday, June 28, 2025

চার শতাধিক আনসার সদস্য পুলিশ হেফাজতে

আরও পড়ুন

রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ রয়েছেন।

সচিবালয় এলাকায় রোববার (২৫ আগস্ট) রাত ৯টার পর ওই সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায় আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা। অনেককে ইউনিফর্ম খুলে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় সচিবালয় এলাকা থেকে দুই নারী সদস্যসহ প্রায় চার শতাধিক আনসার সদস্যকে হেফাজতে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ হেফাজতে নেয়া সদস্যদের ঢাকার শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও মতিঝিলসহ আশপাশের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হতে পারে। রাত আড়াইটা পর্যন্ত সচিবালয় গেট থেকে আটক আনসার সদস্যদের পুলিশের প্রিয়জন ভ্যানে করে বিভিন্ন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  আন্দোলনে গুলি চালানো যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. সারোয়ার বলেন, চার শতাধিক আন্দোলনরত সাধারণ আনসার সদস্যদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তাদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সরজমিনে রাত দুইটা দিকে সচিবালয়ের দুই নম্বর গেটে গিয়ে দেখা যায়, আন্দোলনে অংশ নেয়া যেসব আনসার সদস্য শিক্ষার্থীদের হামলা থেকে বাঁচতে সচিবালয়ের মধ্যে অবস্থানে নেয়। তাদেরকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে এসে রাস্তার উপরে দাঁড় করে রাখা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তায় চারপাশে সেনাবাহিনী সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।

এর আগে রোববার সকাল ৮টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আন্দোলনকারী আনসার সদস্যরা প্রেসক্লাব ও কদম ফোয়ারা এলাকায় রাস্তায় ব্যারিগেট ফেলে আন্দোলন করে। পরে তারা জিরো পয়েন্ট থেকে সচিবালয় রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরই মধ্যে তাদের একটি অংশ সচিবালয়ের মধ্যে প্রবেশ করে আন্দোলন শুরু করে। সর্বশেষ বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ তিন উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করেন। সেখানে তাদের রেস্ট ছুটি বাতিলসহ কয়েকটি দাবি মেনে নেয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  পুলিশের সাঁজোয়া যানে উল্লাস-ভাঙচুর: কোটাবিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা

এতে সাধারণ আনসার সদস্যদের একটি অংশ আন্দোলন স্থগিত করে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে আবার আরেকটি অংশ চাকরি জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয় থেকে তারা বাসায় ফিরবে না বলে ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। এরই মধ্যে রাত ৮টার দিকে পাঁচ উপদেষ্টার সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসে তারা। তখনও উপদেষ্টাদের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে না পেরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এতে সকাল থেকে সচিবালয়ের মধ্যে অবরুদ্ধ হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৯টার পরে সমন্বয়কদের আহ্বানে সচিবালয় থেকে এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  গাছটি হতে পারে মৃত্যুর কারণ, জন্মাচ্ছে বাড়ির আশেপাশেই

রাত ১০টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের মধ্য থেকে এক নম্বর ভবনের সামনের গেট দিয়ে প্রথম একটি অ্যাম্বুলেন্স বের হয়। তারপর সারিবদ্ধভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী গাড়িগুলো একে একে বের হতে থাকে। এ সময় গেটের দুই পাশে সেনা সদস্য ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তা দেন। এদিকে সচিবালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুখে আতঙ্কের ছাপ থাকলেও তারা হাত নেড়ে অভিনন্দন জানান শিক্ষার্থীদের।

এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপদেষ্টা নাহিদ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম সচিবালয়ের এক নম্বর ভবনের পাশে বের হওয়ার গেটে এসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেসব আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে তাদের রাতের মধ্যে গ্রেপ্তার করার দাবি করছি। তাদের আইনের মুখোমুখি করা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ