Thursday, March 20, 2025

ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ১

আরও পড়ুন

ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় একজন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন একাধিকজন। এ ছাড়া চার শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট ও বসতবাড়ি। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বন্যাদুর্গতরা। এ দিকে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি।

ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম ও পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।

এ ছাড়া ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নসহ তলিয়ে গেছে পুরো উপজেলার রাস্তাঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চাল ছুঁয়েছে বন্যার পানি। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয় খুঁজছেন বাসিন্দারা। বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

আরও পড়ুনঃ  মোবাইল চার্জে দিয়ে ঘুম, বিস্ফোরণে চিকিৎসকের মৃত্যু

বুধবার (২১ আগস্ট) পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ভয়াবহ এ বন্যায় স্থানীয় পৌরসভা ও উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। দিনের প্রথম প্রহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক ছাত্রদের সহায়তায় নৌকা দিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করার জন্য সেনাবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একজন লোক নিখোঁজ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের মাঝে ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ ও আরও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০ টন চাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দুর্গাপূজায় স্বেচ্ছাসেবক হতে চায় মাদ্রাসাছাত্ররা : ধর্ম উপদেষ্টা

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়া বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এ বন্যায় উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক ছাত্রদের সহায়তায় নৌকা দিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সহায়তায় উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজন মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পানির উচ্চতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ ও আরও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৮ টন চাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দেশবাসীর প্রতি জামায়াত আমিরের বিশেষ বার্তা

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মুনীর হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে।

ফেনী ৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বিজিবি নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি উদ্ধারকৃত জনসাধারণের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও জরুরি শুকনো খাবারও বিতরণ করছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান এবং ত্রাণ সহায়তা নিয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ