রোববার (১২ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এলসিসিআই) এক সভায় যোগ দেন রাষ্টদূত ইকবাল খান। সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী মহলকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ভিসা দেয়ার সময় পাকিস্তানের মিশন প্রধানদের জন্য ঢাকা থেকে ছাড়পত্র নেয়ার যে প্রয়োজনীয়তা ছিল তা তুলে নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী, যা গত এক দশকে সন্তোষজনক ছিল না। দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়া এখন সময়ের দাবি। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন এবং এক্ষেত্রে লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা এলসিসিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাংলাদেশের এই কূটনীতিক আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনা অনেকাংশে কাজে লাগানো হয়নি এবং পাকিস্তানের এটাকে কাজে লাগানোর সক্ষমতা রয়েছে। তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন।
এছাড়া তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানান এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়াতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বহুদিনের শীতল সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে।
গত মাসে মিসরের রাজধানী কায়রোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট ডি-৮ সম্মেলনে ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে একমত হন তারা।
দুই দেশের রাসায়নিক দ্রব্য, সিমেন্ট, চিকিৎসা ও সার্জিক্যাল উপকরণ, চামড়া শিল্প, তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেন দুই নেতা। বৈঠকে বাংলাদেশের ভিসাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে জটিলতার বিষয়টি তুলে ধরেন শেহবাজ শরিফ। বাংলাদেশ সরকার ব্যাপারটা দেখবে বলে তাকে আশ্বস্ত করেন ড. মুহম্মদ ইউনূস।