Monday, August 18, 2025

‘গণ অভ্যুত্থান না হলে ওসি হতে পারতাম না’, বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ওসি

আরও পড়ুন

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা বিএনপির কর্মী সভায় ‘৫ অগাস্ট ‘গণ অভ্যুত্থান না হলে ওসি হতে পারতাম না’ বক্তব্য নিয়ে আলোচনায় এসেছেন স্থানীয় থানার ওসি মঈনুল ইসলাম।

তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সেখানে। একটি রাজনৈতিক দলের সভায় পুলিশের দেওয়া এমন বক্তব্যকে অপেশাদার বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

বুধবারের এ ঘটনার দুই দিন পর তার বক্তব্যের ভিডিওটি ফেইসবুকে ছড়ালে খোকসা থানার ওসি মঈনুল তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন।

বুধবার খোকসা উপজেলার জানিপুর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপি কর্মীসভার আয়োজন করে।

দুই মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে ওসি মঈনুল ইসলাম বলেছেন, “১৫ থেকে ১৬ বছর কীভাবে, কোথায় ছিলেন, আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন। কোথায়, কীভাবে কষ্ট করেছেন। আপনারা ঠিকমত বাড়িতে থাকতে পারেন নাই। আমি পুলিশ, হয়ত আরেকজন ছিল। আমাকে বাধ্য করেছে।

আরও পড়ুনঃ  ১৮ মাসের মধ্যে যেন নির্বাচন হতে পারে সেজন্য সরকারকে সহায়তা করব: সেনাপ্রধান

“হয়ত আমাকে দেখে আপনারা বলছেন, এ বড় বড় কথা বলে। আসলে না। আমিও ওই রকম নির্যাতিত ছিলাম। ৫ তারিখের ‘গণ অভ্যুত্থান’ না হলে আমি এখানে ওসি হতে পারতাম না। এটা আমি সব সময় বলি এবং স্বীকার করি।”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পরে আপনারা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছেন। এখন আপনারা এক জায়গায় হতে পারছেন, মন খুলে কথা বলতে পারছেন। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, যে, সুযোগটা আসছে, সেই সুযোগটা সদ্ব্যবহার করেন। এমন কোনো কাজ কইরেন না, যে আপনাদের মধ্যে থেকে তৃতীয় পক্ষ কোনও সুযোগ নিতে পারে।

“এ প্রোগ্রামটা আপনাদেরই। আমি পুলিশ কেন আসব। তারপরও আমি আসলাম। আমার থানার সামনে, আসতে হবে। মনও চায় আসতে। মনেরও টান দেয় যে এখানে একটু কথা বলি। আসলে সব সময় তো সব কথা বলা যায় না। আমি আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি, কেউ কোনো ঝামেলা করবেন না।

আরও পড়ুনঃ  যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেলো

“আমরা আপনাদের সেবায় এখানে আছি। যতটুকু পারি আমাদের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব। সব হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে যান। আপনাদের মধ্যে যদি হিংসা থাকে তাহলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেবে। এই সুযোগ আর দেওয়া যাবে না।”

বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির দুপক্ষকে থামাতে ওই মঞ্চে উঠে এমন বক্তব্য দিয়েছি, এ ছাড়া আমার অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।”

বুধবারের সমাবেশে উপস্থিত থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেই দিন সকাল ১০টায় খোকসা উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে বিশেষ কর্মীসভা ছিল। সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  পুলিশের সহায়তায় ২৮ অক্টোবরের ঘটনা ঘটানো হয়েছে: রিজভী

খোকসা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ আমজাদ আলীর সভাপতিত্বে সেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ, সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বক্তব্য দেন।

সভাকে ঘিরে সকাল থেকেই স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হট্টগোল চলছিল। প্রথমে বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন খান মঞ্চের মাইকে নেতাকর্মীদের শান্ত থাকতে বলেন। পরে বেলা ১১টার দিকে খোকসা থানার ওসি মঈনুল ইসলাম মঞ্চে উঠে মাইকে বক্তব্য দেন।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, “বিষয়টি নজরে এসেছে। কি বক্তব্য দিয়েছে সেটা তার (ওসি) ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ