Thursday, July 10, 2025

স্বামীর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে বিয়ের তৃতীয় দিনে কোমায় স্ত্রী

আরও পড়ুন

পাকিস্তানের করাচিতে ১৯ বছর বয়সী নববধূ ‘নৃশংস যৌন নির্যাতনের’ শিকার হয়ে বর্তমানে কোমায় রয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে করাচির সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সার্জন ডা. সুমাইয়া সাঈদ সংবাদমাধ্যম ডনকে জানান, ‘ভুক্তভোগীর পরিবার এবং পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, গত ১৫ জুন লিয়ারিতে মেয়েটির বিয়ে হয়। এখন সে কোমায় আছে। তার শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদনের তথ্য যৌন নির্যাতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ’।

ভুক্তভোগীর ভাইয়ের দায়ের করা এফআইআরের তথ্য অনুযায়ী, তিনি করাচির লিয়ারির বাগদাদী থানার শাহ বেগ লেনের বাসিন্দা। এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘বিয়ের তৃতীয় রাতেই আমার বোন তার স্বামীর হাতে নৃশংস যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। প্রথমে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে শহরের সিভিল হাসপাতালের শহীদ মোতর্মা বেনজির ভুট্টো ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।’

আরও পড়ুনঃ  বন্দি ফিলিস্তিনিদের বৈদ্যুতিক শক দিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা!

এফআইআরে আরও বলা হয়, ‘৩০ জুন ভুক্তভোগীর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, পরিবার তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে মেয়েটি জানায়, ১৭ জুলাই তার স্বামী তাকে ‘অস্বাভাবিক যৌন আচরণে’ বাধ্য করে।

আরও পড়ুন : জুতা খোলার নিয়ম শেষ, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস পাল্টে যাওয়ার পেছনে যে কারণ

এছাড়াও, অভিযুক্ত স্বামী একটি বিদেশি বস্তু ব্যবহার করে যৌন নিপীড়ন চালায়, যার ফলে মারাত্মক রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর মেয়েটিকে হুমকি দেয়া হয়-ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে ‘ভয়ানক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ভারতের এত বড় ক্ষতি করলো হাসিনা? দুধ-কলা দিয়ে কাল সাপ পুষলো ওরা!

পরিবার মেয়েটিকে প্রথমে গার্ডেন রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ফের তাকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে ৪ জুলাই গুরুতর অবস্থায় তাকে সিভিল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে শত বছরের ইতিহাসে আকস্মিক বন্যায় নিহত-নিখোঁজ ২৮১, দায় কার

এফআইআরে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর ভাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছেন। সাউথ জোনের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) সৈয়দ আসাদ রেজা ডনকে জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে।

পাকিস্তানে বিদ্যমান অ্যান্টি-রেপ আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা ১০ থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হলেও, বাস্তবে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। গত সপ্তাহেই করাচির ইত্তেহাদ টাউনে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। মে মাসে, করাচির উত্তর এলাকায় এক বাড়িতে দুই বোন যৌন নির্যাতনের শিকার হন।

আরও পড়ুনঃ  যুদ্ধ থামানোর বার্তা, মুসলমানদের ধন্যবাদ জানালেন ট্রাম্প

এপ্রিল মাসে, গুজরানওয়ালায় এক ব্যতিক্রমী রায়ে, স্ত্রীকে অস্বাভাবিক যৌন নির্যাতনের দায়ে এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। এ ঘটনা শুধু নারী নির্যাতনের এক বীভৎস দৃষ্টান্ত নয়, বরং সমাজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সহিংসতার মনস্তত্ত্ব ও আইনের প্রয়োগে ঘাটতির প্রতিফলন। সমাজ ও রাষ্ট্র-উভয়েরই এ বিষয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা জরুরি।

সর্বশেষ সংবাদ